আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা উপজেলার পুরাতন পাঁচলিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম মাস্টারের বিরুদ্ধে সাধারণ ধান বাড়িতে প্যাকেটজাত করে ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের ওই বীজ কিনে প্রতারিত কৃষকের অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ নিম্নমানের বীজসহ রফিকুল মাস্টারের ছেলে রিমনকে (২৪) গ্রেফতার করে। পরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় রিমনকে তার পিতার জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, পুরাতন পাঁচলিয়ার রফিকুল ইসলাম মাস্টার পুরাতন পাঁচলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি ধানবীজের ব্যবসা করছেন বলে জানা গেছে। একাধিকসূত্র জানিয়েছে, রাফিকুল মাস্টার গত বছর নিজ জমির ও গ্রামের অনেকের নিকট থেকে ভালো ধান সংগ্রহ করে তা প্রক্রিয়াজাতকরণ করে প্যাকেটে ভরে কৃষকের নিকট বিক্রি করেছেন। রেজাল্ট মোটামুটি সন্তোষজনক ছিলো। এবছর তিনি ২০ লাখ টাকার তার নিজের প্যাকেটজাত বীজ বিক্রির টার্গেট নিয়ে বাজারে নামেন।
অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, রাফিকুল মাস্টার উত্তরবঙ্গ থেকে ট্রাকভর্তি সাধারণ ধান কিনে নিয়ে এসে বাড়িতে বসে প্যাকেটজাত করে বিভিন্ন বীজব্যবসায়ীর নিকট সরবরাহ করতো। তিনি আলমডাঙ্গা বাজারের ইসলাম বীজভাণ্ডার, আনন্দধামসহ মধুপুর বাজারের লিটন, জামজামীর ইবাদত, ভদুয়া গ্রামের ইরাসহ অনেক বীজব্যবসায়ীর নিকট সরবরাহ করেন। আরএস সীড নামে সুদৃশ্য প্যাকেটজাত করে তিনি বাজারে ছাড়ছেন। সম্প্রতি বাদেমাজু গ্রামের কৃষক শহিদুল, বক্সিপুরের সিরাজুল, ভদুয়া গ্রামের ইরাসহ এলাকার বহু কৃষক ওই বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন।
আলমডাঙ্গার এক বীজব্যবসায়ী জানিয়েছেন, তার দোকান থেকে বক্সিপুর গ্রামের সিরাজুল ওই বীজ কিনে বীজতলায় ফেললে অঙ্কুরোদগমন হয়নি। দরিদ্র কৃষক এসে কান্নাকাটি করলে তিনি তাকে ২শ টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। প্রতারিত কৃষকদের অনেকে বিষয়টি পুলিশকে জানালে আলমডাঙ্গা থানার এএসআই মেজবা প্রতারিত কৃষকদের সাথে কথা বলে আলমডাঙ্গার এক বীজব্যবসায়ীর দোকান থেকে ৫ বস্তা নকল ধানবীজ উদ্ধার করেন। ওই সময় পুলিশ রফিকুল মাস্টারের ছেলে রিমনকে গ্রেফতার করে। পরে পুলিশ উদ্ধারকৃত বীজ পরীক্ষার জন্য কৃষি অফিসকে জানালে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার সাইফুল ইসলাম তা পরীক্ষা করেন। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে বীজ ভালো তবে নিশ্চিত হতে ২ দিন লাগবে-কৃষি কর্মকর্তার এমন প্রত্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ রিমনকে তার পিতার জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।