জাতীয় রাজনীতির টুকরো খবর

জিয়া অরফানেজ মামলার রায় ৮ ফেব্রুয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ৮ ফেব্রুয়ারি। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলায় উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হলে ঢাকার বিশেষ জজ-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান রায়ের এ দিন ঠিক করেন।

আদালত সূত্র জানায়, দুদক ও আসামি পক্ষে ১৬ কার্যদিবস ধরে যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। আর ২৩৬ কার্যদিবস শুনানির পর এ মামলা রায়ের পর্যায়ে এলো। দুদকের পক্ষে আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন। আর খালেদা জিয়ার প্রধান আইনজীবী আবদুর রেজাক খান মামলাটিকে সারবত্তাহীন উল্লেখ করে খালেদা জিয়ার খালাস চান।

বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়া গতকাল আদালতে হাজির হন। আর বেলা তিনটা ২৫ মিনিটের দিকে আদালত চত্বর ত্যাগ করেন। ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুদক খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট এই মামলায় খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মাগুরার বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। মামলায় শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।

সরকার রায় লিখে রেখেছে: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার রায় পূর্ব নির্ধারিত। এই অবৈধ সরকার আগেই রায় লিখে রেখেছে। বিচার হবে প্রধানমন্ত্রী যা চাইবেন,তাই।’ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য ২৪টি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মিথ্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘নজিরবিহীন দ্রুততার সঙ্গে মামলা শেষ করার প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে এই সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় করে বলেই তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়।’

ফখরুল কী করে জানলেন রায় কী হবে: কাদের

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব কী করে জানলেন, এই মামলার রায় কী হবে? এই মামলায় আদালত খালেদা জিয়াকে সাজা দেবে, এ রকম নিশ্চয়তা তাকে কে দিল?’ গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন। প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ওবায়দুল কাদের। নয়াপল্টনে গতকাল দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার রায় পূর্বনির্ধারিত। এই অবৈধ সরকার আগেই রায় লিখে রেখেছে। বিচার হবে প্রধানমন্ত্রী যা চাইবেন, তাই। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আগেভাগেই কী করে জানলেন খালেদা জিয়ার সাজা হবে? আদালত নির্দোষও করতে পারেন, সাজাও দিতে পারেন এটা আদালতের বিষয়। এখানে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, সরকার এ পর্যন্ত বিচার বিভাগে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। সুপ্রিম কোর্ট ষোড়শ সংশোধনীর রায় কী দিয়েছেন,সবাই জানে। এটা কি সরকারের পক্ষে?

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এই মামলাটিতে মির্জা ফখরুল বারবার বলার চেষ্টা করছেন যেন শেখ হাসিনা সরকার এই মামলাটি রুজু করে খালেদা জিয়াকে হেনস্তা করছে। তাদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। বিএনপি বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, এই মামলাটি প্রথম দায়ের হয়েছিল ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়। এটি ছিলো দুদকের মামলা। মামলা তো এই সরকার দেয়নি। মামলা দিয়েছে খালেদা জিয়া যাদের তখন… ফখরুদ্দীনও তার সৃষ্টি, মইন উ আহমেদ সাহেবও তার সময় অনেককে ডিঙিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান হয়েছিলেন।

ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন করেন, ‘মামলা তার নিজস্ব গতিতে চলছে। খালেদা জিয়া নির্দোষ হলে তো আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। তিনি সাজা পেলে আমরা কীভাবে রক্ষা করবো? শেখ হাসিনা সরকারের এখানে কী? তাহলে কি আদালত রায় দিতে পারবেন না? আদালত এ দেশে বিচার করতে পারবেন না?’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করবে? প্রতিবাদ করবে? খালেদা জিয়াকে আমরা ভয় পাই না, ভয় পাই ২০১৩-১৪ সালের পেট্রোলবোমাকে। ভয় পায় দেশের মানুষ। তখনকার আগুনসন্ত্রাসকে মানুষ ভয় পায়। বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিকে আওয়ামী লীগ ভয় পায়, খালেদা জিয়াকে আওয়ামী লীগ ভয় পায় না।’

খালেদা জিয়া ইতিবাচক রাজনীতি করলে কোনো অসুবিধা নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেন আমরা তাদের বাধা দেব? নির্বাচন হবে। বিএনপি অংশ নেবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন নির্বাচন আমরা চাই না। বিএনপি আসুক, একটি বড় দল। আমরা একটি ইনক্লুসিভ, পার্টিসিপেটরি, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন আমরা চাই। খালেদা জিয়াকে আমরা সরিয়ে রাখব, তখন তারা আগুন তাণ্ডব চালিয়ে একটি নির্বাচন বয়কট করতে গিয়ে কী করেছিল? কতগুলো স্কুল, ভূমি অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছিল? কতোওগুলো মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছিল, বলুন? এই নারকীয় তাণ্ডবকে আমরা ভয় পাই, খালেদা জিয়াকে না।’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আদালতের রায় মনমতো না হলে আবারও বিএনপি সন্ত্রাস শুরু করবে? তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সচেতন জনগণ এবার প্রতিরোধ করবে।’