ঝিনাইদহে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক ৫ সরকারি প্রতিষ্ঠান চালু হয়নি এক যুগেও

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ জেলা শহরে স্থাপিত স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক ৫ সরকারি প্রতিষ্ঠান পড়ে আছে প্রায় এক যুগ ধরে। এ সব প্রতিষ্ঠানের সুরম্য ভবন নির্মাণ ও মুল্যবান যন্ত্রাংশ কেনা হলেও নেই কর্মকর্তা-কর্মচারী। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ইতোমধ্যে ভবনের জানালা দরজা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও মুল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০০৪ সালের দিকে ঝিনাইদহ জেলা শহরে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক ৬ সরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। তৎকালীন বিএনপি সরকারের সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মো. মসিউর রহমান এসব প্রতিষ্ঠান স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু তারপর যেসব জনপ্রতিনিধি নির্বচিত হয়ে এসেছেন তারা চেষ্টা করেও এই প্রতিষ্ঠানগুলো চালু করতে পারেননি। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের অনেক নেতা এসব প্রতিষ্ঠান চালু করতে মন্ত্রী ও সচিবালয়ে ঘুরেছেন, কিন্তু কোনো ফল হয়নি। ঝিনাইদহ গণপূর্ত ও হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের ধানহাড়িয়া মৌজায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শিশু হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু হাসপাতালটি চালু করা যায়নি ১২ বছরেও। ফলে সদর হাসপাতালে শিশু রোগীদের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশু হাসপাতালটি চালু না হওয়ার পেছনে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও জনপ্রতিনিধিদের গাফিলতিকে দায়ি করছেন জেলার সাধারণ মানুষ। ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিবন্ধি স্কুল, ধানহাড়িয়ায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট, হাসপাতাল চত্ত্বরে ১৬ লাখ টাকা ব্যায়ে করণারী কেয়ার ইউনিট ও পুরাতন হাসপাতাল চত্ত্বরে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে খাবার স্যালাইন ফ্যাক্টরি স্থাপন করা হলেও আজও আলোর মুখ দেখিনি। কবে চালু হবে কিংবা আদৌ চালু করা সম্ভব কি-না তা অনিশ্চিত। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একমাত্র শহরের চাকলাপাড়ায় স্থাপতি ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি চালু করা হলেও প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে জমি না পাওয়ায় ট্রমা হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পটি বাতিল হয়ে গেছে। অভিযোগ উঠেছে সরকারি পরিসেবা দফতরগুলো এসব স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠান চালু করতে ব্যর্থ হয়েছে। ঝিনাইদহ বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. দুলাল চক্রবর্তী জানান, স্থাপিত এসব প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক হলেও জেলার মানুষের কল্যাণে কাজ করতো। তিনি বলেন, নানান জটিলতার কারণে এসব প্রতিষ্ঠান চালু করা যাচ্ছে না। এর মধ্যে পোস্টক্রিয়েট ও বেতন কোড সংক্রান্ত জটিলতা। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. রাশেদা সুলতানা জানান, এসব প্রতিষ্ঠান চালু করতে আমরা প্রতিনিয়ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে যোগাযোগ রাখছি। তিনি বলেন, খুব দ্রুতই শিশু হাসপাতালটি আমরা চালু করতে পারবো। এ নিয়ে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।