জুমা’র নামাজে লাখো মুসল্লি

ইবাদত বন্দেগিতে মুখর তুরাগ তীর

স্টাফ রিপোর্টার: টঙ্গীর তুরাগ তীরে এখন লাখো মুসল্লির ঢল। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় ছুটে এসেছেন তারা। গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে আমবয়ানের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ৩ দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিনেই টঙ্গীর তুরাগ তীরে জুমা’র নামাজে লাখো মুসল্লির ঢল নামে। জুমা’র নামাজে অংশ নিতে ঢাকার আশপাশ থেকেও ছুটে আসেন মুসল্লিরা। এদিকে দেশের মুসল্লিদের পাশাপাশি এখনও আসছেন বিদেশি অতিথিরা। তবে বিদেশি মেহমানদের সাথে যাতে কোনো জঙ্গি দেশে ঢুকতে না পারে সেজন্য সতর্ক দৃষ্টি রাখছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার বৃহত্তম জুমা’র নামাজে অংশ নিতে ভোর থেকেই ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। দুপুর ১২টার মধ্যেই ইজতেমা ময়দান ও এর আশপাশের খোলা জায়গা পূর্ণ হয়ে যায়। ইজতেমা প্রাঙ্গণ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। অনেকে ময়দানে জায়গা না পেয়ে মহাসড়ক ও অলি-গলিতে পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ বিছিয়ে জুমার নামাজে শরিক হন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বেশ কিছুক্ষণের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর ১টা ৪৪ মিনিটে শুরু হয় জুমার জামাত। বিশাল এ জামাতের ইমামতি করেন বাংলাদেশের কাকরাইল মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের। ইজতেমায় লাখো মুসল্লির সাথে জুমার নামাজে অংশ নেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাড. আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি আবুল কালাম সিদ্দিক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মো. হুমায়ুন কবীর, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। এদিকে জুমার নামাজের পর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকার উত্তরা থেকে বোর্ডবাজার পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার মুসল্লি।

এরআগে বাদ ফজর তাবলিগের শীর্ষস্থানীয় জর্ডানের মাওলানা শেখ ওমর খতিবের আম বয়ানের মধ্যদিয়ে শুরু হয় ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর বাদ জুমা বয়ান করেন বাংলাদেশের মাওলানা মোহাম্মদ হোসেন, বাদ আছর বয়ান করেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল বার ও বাদ মাগরিব বয়ান করেন বাংলাদেশের মাওলান মোহাম্মদ রবিউল হক। মূল বয়ান আরবিতে হলেও বাংলা, ইংরেজি, ঊর্দু, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি, ফারসিসহ বিভিন্ন ভাষায় তাত্ক্ষণিকভাবে তা অনুবাদ করা হয়। ইজতেমায় বিভিন্ন ভাষাভাষী মুসল্লিরা আলাদা আলাদা তাঁবুতে বসেন এবং তাদের মধ্যে একজন করে মুরুব্বি মূল বয়ানকে তাত্ক্ষণিকভাবে অনুবাদ করে শোনান।

বয়ানে বলা হয়, ‘পৃথিবীতে ঈমানের মূল্য অনেক বেশি। ঈমানকে মজবুত করতে হলে আমাদের দাওয়াতি কাজে সময় লাগাতে হবে। আমরা যেন আল্লাহপাকের হুকুম মতো সারা জীবন চলতে পারি সে চেষ্টা করতে হবে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশে ও সারা দুনিয়ায় মানুষের মাঝে দীন কায়েম করার জন্য ছড়িয়ে পড়তে হবে।’