স্টাফ রিপোর্টার: দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে স্বাস্থ্য সহকারীরা লাগাতার ধর্মঘট কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। আজ বুধবার স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজে যোগ দেবেন। গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা শেষে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরসহ সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করা হয়। স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও দাবি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক এনায়েত রাব্বি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকার আমাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। তাই আমরা আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করছি। আজ বুধবার থেকে দেশের সব স্বাস্থ্য সহকারী কাজে যোগ দেবেন।’ গত সোমবার ও মঙ্গলবার দু’দিন সারাদেশের গ্রামাঞ্চলে টিকাদানসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বড় অংশ বন্ধ ছিলো। স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কমিটির ডাকা লাগাতার ধর্মঘটের কারণে দেশের ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারী কর্মস্থলে না গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করেন। স্বাস্থ্য সহকারীদের ৪ দফা দাবি হচ্ছে স্বাস্থ্য সহকারীদের বেতনস্কেলসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দিতে হবে, মাঠ/ভ্রমণভাতা ও ঝুঁকিভাতা মূল বেতনের ৩০ শতাংশ হারে দিতে হবে, প্রতি ৬ হাজার জনগোষ্ঠীর জন্য একজন করে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ দেয়ার পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে শূন্য পদে নিয়োগ দিতে হবে এবং ১০ শতাংশ পোষ্য কোটা প্রবর্তন করতে হবে।
চুয়াডাঙ্গায় দাবি আদায়ের লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিসুজ্জামান মালিথা, সহসভাপতি আব্দুল গনি, বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল হাসান প্রিন্স, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক আব্দুর রাজ্জাক, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক হামিদুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ইদ্রিস আলি ম-ল, ছমিরুল ইসলাম, খন্দকার মইনুদ্দিন, কুদরতে হাফিজ, সাইদুর রহমান দামুরহুদার স্বাস্থ্য সহকারী আজহার আলী, রাশিদুল ইসলাম, আলমডাঙ্গার রনি এবং সদর উপজেলার সভাপতি আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছেন, জীবননগরে টেকনিক্যাল বেতনস্কেল ও পদমর্যাদাসহ ৪ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীরা লাগাতার কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন শুরু করেছে। গত সোমবার সকাল ৮টায় জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে স্বাস্থ্য সহকারীরা এ কর্মবিরতি পালন শুরু করে। স্বাস্থ্য কর্মীদের এ কর্মবিরতির ফলে গত সোমবার এ উপজেলায় টিকা ও ভ্যাকসিন প্রদানসহ সকল প্রকার কার্যক্রম বিঘিœত হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ বিড়ম্ববনার মধ্যে ফলে।
উপজেলা টেকনিক্যালের ইন্সপেক্টর শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে ৪ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উপজেলার টেকনিক্যাল কর্মকর্তাগণ কর্মবিরতি পালন শেষে আলোচনা সভা করেন। এ সময় তারা ৪ দফা দাবি তুলে ধরে বলেন, আমরা ১৯৯৮ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অবিলম্বে বাস্তবায়ন চাই। সভায় সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক মুন্সী আব্দুস সবুর, মোকতেদা খাতুন, আনিছুর রহমান, রেহেনা সুলতানা, আতিকুর রহমান, নাদির শাহ, সাইফুজ্জামান, মশিয়ার রহমান, নূরুল ইসলাম, আসমা খাতুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছেন, ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২য় দিনেও কর্মবিরতি পালন করেছে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন মেহেরপুর জেলা শাখা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সামনে কর্মবিরতি পালন করেন জেলায় নিয়োজিত সকল স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক এবং স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা। এসময় সেখানে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ বিপ্লবসহ স্বাস্থ্যসেবায় জড়িত জেলার সকল স্বাস্থ্য সহকারীরা কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এসময় বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানান।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে তারা অবস্থান নেয়। এতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসরীন সুলতানা। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজেলায় কর্মরত উপস্থিত স্বাস্থ্য সহকারীবৃন্দ। বক্তারা বেতনস্কেলসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা, অন্যান্য ভাতাদি, স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগসহ পোষ্য কোটা বাস্তবায়নের দাবি জানান। কর্মবিরতির ফলে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।