চুয়াডাঙ্গায় প্রতারকের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়ালেন মজিবর নামের এক ভিক্ষুক
স্টাফ রিপোর্টার: চাচা আমি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে এসেছি। হাসপাতালের এক ডাক্তার একজন গরিব মানুষকে কিছু আর্থিক সাহায্য করতে চায়। আপনাকে প্রায়ই দেখি এখানে বসে ভিক্ষা করতে। আপনাকে আমার খুব ভালো লেগেছে তাই আপনাকেই আমি ওই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো, কারণ ওই আর্থিক সাহায্য আপনি পান। এই কথা বলে দুজন মিলে ইজিবাইকে ওঠা, পথিমধ্যে টাকা হাতিয়ে নেয়া, পরে বৃদ্ধকে হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড় করিয়ে প্রতারকের সটকে পড়া। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এমনই একটা ঘটনা ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউ মার্কেটের সামনে থেকে। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি পশ্চিমপাড়ার মৃত মোহাম্মদ আলী বিশ্বাসের ছেলে মজিবর বিশ্বাস (৮০) একজন ভিক্ষুক। তিনি প্রতিদিনের ন্যায় চুয়াডাঙ্গা নিউ মার্কেটের প্রধান ফটকের সামনে বসে ভিক্ষা করেন। বেলা ১১টার দিকে ভদ্রবেসে এক ব্যক্তি এসে তাকে বলে, চাচা আমি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে এসেছি। একজন ডাক্তার আমাকে পাঠিয়েছে। তিনি একজন দরিদ্র ব্যক্তিকে কিছু আর্থিক সাহায্য করতে চায়। আমি আপনাকে প্রতিদিন এখানে বসে ভিক্ষা করতে দেখি। আপনি আমার সাথে চলেন। এই বলে অপরিচিত ওই ব্যক্তির সাথে মজিবর বিশ্বাসকে নিয়ে ইজিবাইকে উঠিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দিলো। পথিমধ্যে অপরিচিত ওই ব্যক্তি তাকে বললেন আপনার কাছে ৫শ টাকা ভাংটি হবে। মজিবর বিশ্বাস তার কাছে থাকা একটা কৌটা থেকে কিছু টাকা বের করে অপরিচিত ওই ব্যক্তির হাতে দেয়। সেখানে ছিলো ১৭শ টাকা। ২শ টাকা মজিবর বিশ্বাসকে ফিরিয়ে দিয়ে ১৫শ টাকা ওই ব্যক্তি রেখে দিয়ে বলে, হাসপাতালে গিয়ে দিচ্ছি। ইজিবাইকটি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গেলে মজিবর বিশ্বাসকে ভাড়া মিটিয়ে দিতে বলে ভদ্রবেশি ওই প্রতারক। হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করে প্রতারক মজিবর বিশ্বাসকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যায়। বলে আপনি এখানে দাঁড়িয়ে থাকেন, আমি ডাক্তার সাহেবকে ডেকে নিয়ে আসি। এই বলে প্রতারক সটকে পড়ে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর মজিবর বিশ্বাস হতাশ হয়ে কাঁদতে কাঁদতে হাসপাতালের চারিদিকে ছুটে বেড়ায়। মজিবর বিশ্বাস বলেন, টাকাগুলো অনেক কষ্টে জমিয়েছি আমার স্ত্রী পরিছন বেগমের চোখের চিকিৎসা করাবো বলে। পরে বিষয়টি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.শামীম কবির ঘটনাটি শোনার পর হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে প্রতারককে শনাক্ত করেন।
উলেখ্য, গত ১২ জুলাই জীবননগরের তেতুলিয়ার জিয়ারুল ইসলামের কাছ থেকে জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত ১০ হাজার টাকার একটা চেক হাতে ধরিয়ে দিয়ে প্রতারণা করে মোবাইলফোন হাতিয়ে নিয়ে সটকেপড়া ব্যক্তির চেহারা এবং মজিবর বিশ্বাসের কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেয়া ব্যক্তির চেহারা হুবহু এক রকম।