নেশার ফাঁদে প্রাণ গেলো গাংনীর রাশেদের

গাংনী প্রতিনিধি: প্রায় দশ বছর ধরে নেশার ফাঁদে। গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইনসেবন ছিলো নিত্য নৈমত্তিক অভ্যাস। এগুলো না পেলে ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করেই নেশা মেটাতো। গাঁজাসেবন ও রাখার দায়ে জেলও খেটেছে ছয় মাস। পরিবার ও সমাজ চেষ্টা করেও স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে ব্যর্থ। কিন্তু না, এখন তাকে নিয়ে কেউ আর আলোচনা-সমালোচনা করবে না। পিতা-মাতা, স্ত্রী, শিশু পুত্র শুধুই তার শূন্যতা অনুভব করবেন। নেশাগ্রস্থ যুবক রাশেদের (২৫) মৃত্যু নিয়ে এমনই মন্তব্য গ্রামবাসীর। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবার। নেশার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত পরিবার ও পুলিশ। সে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের গোরস্তানপাড়ার গার্মেন্টস শ্রমিক জেল হকের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে নেশা করে অচেতন হয়ে পড়ে রাশেদ। গ্রামের সামসুজ্জামানের মুদি দোকানের সামনে থেকে গ্রামের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় নিজ ঘর থেকে তার মরদেহ পায় পরিবার।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গভীর রাত পর্যন্ত নেশা করে বাড়ি ফেরে রাশেদ। ঘুম থেকে ওঠে বেলা ১১টায়। নেশার ঘোরে রাস্তাঘাটে টলকে বেড়ায়। পরিবার থেকে চেষ্টা করেও তাকে ফেরাতে পারেনি। কয়েক মাস আগে পরিবারের লোকজনের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তার ছয় মাসের জেল দেয়। সম্প্রতি জেল থেকে ফিরে আবারও নেশায় জড়িয়ে পড়ে। দাম্পত্য জীবনে এক শিশু পুত্রের জনক। নেশার কারণে তার পরিবারে অশান্তি বিরাজ করছিলো। তবুও শিশু পুত্রের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নেশাখোর স্বামীর সংসারেই পড়ে ছিলেন স্ত্রী। কিন্তু সেই সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে ব্যাকূল তিনি। এদিকে রাশেদের করুণ পরিণতি চোখের সামনে যারা দেখেছেন তারাই গ্রামে মাদক প্রতিরোধে কঠোর হওয়ার বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। বাঁশবাড়িয়া গ্রামে উঠতি বয়সী অর্ধশতাধিক ছেলে নেশায় জড়িয়ে পড়েছে বলে জানালেন কয়েকজন। রাতের আধারে গ্রামের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে নেশা করছে তারা। তাদের দেখাদেখি আরও অনেক ছেলে বিপথে যেতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করলেন কয়েকজন অভিভাবক। তাই সদ্য পা দেয়া এসব ছেলেদের নেশার পথ থেকে ফেরাতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।