আলমডাঙ্গায় তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে প্রধানবক্তাকে নিয়ে বিরোধের জেরে শহরে ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গায় তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে এক বক্তাকে নিয়ে বিরোধের জেরে শহরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১১টায় ওই ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার আনন্দধাম সড়কের পল্লী বিদ্যুত অফিসের পেছনের মাঠে নবনির্মিত মসজিদের সাহায্যার্থে ৩দিনব্যাপী তাফসির মাহফিলের আয়োজন করা হয়। পুরাতন বাজার-কলেজপাড়া ও আনন্দধামের একাংশ মুসল্লিরা ওই তাফসির মাহফিলের আয়োজন করেন। গতকাল শুক্রবার ২য় দিনের তাফসির মাহফিলে প্রধানবক্তা আমীর হামজার বক্তব্য দেয়ার ঘোষণায় হাজার হাজার মানুষের সমাবেশ ঘটে।
মাহফিল আয়োজনে থানা পুলিশ অনুমতি দিলেও বিতর্কিত তাফসিরকারক আমীর হামজাকে আনতে পুলিশ আগে থেকেই নিষেধ করেছিলো। কিন্ত মাহফিলের ২য় দিন গত বৃস্পতিবার রাত পৌঁনে ১১টায় আয়োজকদের একটি অংশ হঠাৎ করেই আমীর হামজাকে প্রধানবক্তা হিসেবে মঞ্চে তোলেন। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে আয়োজকদের কাছে আমীর হামজাকে বক্তব্য দিতে নিষেধ করা হয়। এর কয়েক মিনিটের মাথায় আমীর হামজা মঞ্চ থেকে নেমে যান। মাহফিল ভেঙে যায়। এ ঘটনায় তাফসির মাহফিলে আগত মুসল্লিদের ভেতর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধরা বাড়ি ফেরার পথে শহরের চারতলামোড়সহ প্রধান সড়কের তিনটি সিসি ক্যামেরা ও চারতলার একটি মিষ্টির দোকানের বেসিন ভাঙচুর করে। স্থানীয় সত্য নারায়ণ মন্দিরের সামনে সিসি ক্যামেরা ভাঙার সময় ইটের বেশ কিছু টুকরো মন্দিরের ভেতরে গেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ঘটনাটি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। ঘটনার পরপরই থানা পুলিশ ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। সংবাদ পেয়ে রাতেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশের বুদ্ধিমত্তায় সহজেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। সকালে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন খোকন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তরিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর দফতর) আহসান হাবীব, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত মান্নান ও আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ খাঁন সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কর্মকর্তারা এসময় বলেন, কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি বিক্ষিপ্তভাবে হামলা চালিয়ে সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করেছে। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সন্ধ্যার পর পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ খাঁন, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত লুৎফুল কবির উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ সুপার বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেন। ওই ঘটনায় আলমডাঙ্গা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডাক্তার অমল কুমার বিশ্বাসসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ অজ্ঞাত ৩০-৪০ জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় মামলা করেছেন। এদিকে, এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।