আড়িয়া খামারে নেয়ার পথে ৮ বস্তা সার গায়েব ॥ অভিযুক্ত ৩

কেরুজ চিনিকলে আবারো ঘটলো সেই সার চুরির ঘটনা

দর্শনা অফিস / বেগমপুর প্রতিনিধি: বেশ কিছুদিন সার চুরি বন্ধ থাকলেও ফের সার চুরির ঘটনা ঘটেছে কেরুজ চিনিকলের খামার থেকে। কেরুজ চিনিকলের দর্শনা গোডাউন থেকে সার নিয়ে আড়িয়া বাণিজ্যিক খামারের গোডাউনে পৌছানোর আগেই ৮ বস্তা সার হলো গায়েব। গতকাল শুক্রবার কেরুজ চিনিকলের ২০১৭-১৮ আখ মাড়াই মরসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। মিল উদ্বোধন নিয়েই কয়েকদিন ব্যস্ত সময় কাটাতে হয় চিনিকলের প্রায় সকল বিভাগের কর্তাদের। ঠিক এ সুযোগই কাজে লাগিয়েছে অভিযুক্ত সার চোরেরা। সুযোগ বুঝে ৮ বস্তা সার করেছে গায়েব। গত পরশু বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টার দিকে কেরুজ আড়িয়া বাণিজ্যিক খামারের চাহিদা মোতাবেক কেরুজ চিনিকলের দর্শনা প্রধান গোডাউন থেকে সার নেয় বাণিজ্যিক খামারের ট্রাক্টর চালক শহিদুল ইসলাম, হেলপার নিজাম উদ্দীন ও দিন হাজিরার শ্রমিক বিল্লাল হোসেন। ৬০ বস্তা ইউরিয়া, ১শ বস্তা টিএসপি ও ৪০ বস্তা এমওপি সার বুঝে নেয় তারা। বিকেল ৪টার দিকে সার নিয়ে খামারে পৌছায় ওই ৩ জন। সার বুঝে নেয়ার সময় ৩ বস্তা ইউরিয়া, ৪ বস্তা টিএসপি ও ১ বস্তা এমওপি সার কম পাওয়া যায়। খামারের করণিক মহর আলী সার কম পেয়ে ফার্ম ইনচার্জ মনজুরুল ইসলামকে জানান। ডাকা হয় শহিদুল, নিজাম উদ্দিন ও বিল্লালকে। সার কমের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা সদুত্তোর না নিয়ে এড়িয়ে যায়। ঘটনাটি তৎক্ষনিক চিনিকলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। সে মোতাবেক চিনিকল কর্তৃপক্ষ গতকাল শুক্রবার সকালে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পাঠান আড়িয়া খামারে। প্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন, আকরাম হোসেন শিকদার, ফিদাহ হাসান ও শাহদত হোসেন। প্রাথমিক যাচাই-বাচাই করে ৮ বস্তা সার কমের সতত্যা পেয়েছে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। এ ঘটনায় আজ শনিবার অভিযুক্ত ৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আকরাম হোসেন শিকদার। সার চুরির ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, আসলে বাণিজ্যিক খামারের সার গোডাউন থেকে বুঝ করে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব কার? ড্রাইভার হেলপার না কি ফার্ম ইনচার্জের? এ দায়ভার কিভাবে এড়িয়ে যাবেন ফার্ম ইনচার্জ? কেরুজ চিনিকলে চুরি, অনিয়ম-অবহেলা ঠেকাতে কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করছে। অনিয়ম, দুর্নীতি চুরি ঠেকাতে মিল কর্তৃপক্ষ রয়েছে কঠোর অবস্থানে। এতোকিছুর মধ্যেও সার চুরির ঘটনা! ইতোপূর্বে কয়েকবার সার চুরির ঘটনা ঘটলেও কোনো না কোনোভাবে চোর ও চোরচক্রের হোতারা ফসকে গেছে। রয়ে গেছে চুরি ঘটনায় নেপথ্যের নায়কদের নাম পরিচয়। এবারো কি তাই হবে? নাকি চিনিকলের নবাগত ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন কঠোর হস্তে গ্রহণ করবেন যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা? এ ব্যাপারে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশল এনায়েত হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠানের কেউ ক্ষতি করলে সে বিন্দু পরিমাণ ছাড় পাবে না। তার বিরুদ্ধে যে কোনো ব্যবস্থা নিতে পিছুপা হবো না। ফার্ম ম্যানেজার হুমায়ুন কবির বলেছেন, সার চুরির ঘটনাটি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আড়িয়া বাণিজ্যিক খামারের ইনচার্জ মনজুরুল ইসলাম সার বুঝে নেয়ার মতোই এড়িয়ে বললেন কর্তৃপক্ষ যা ভালো বুঝবে তাই করবে।