স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শনিবারও বিশেষ অভিযানে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১২জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করেন। এর মধ্যে আলমডাঙ্গায় ৭জন, দামুড়হুদায় ৩জন, দর্শনায় ২জন ও জীবননগরে ২জনকে সাজা দেয়া হয়।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে চিহ্নিত মাদকব্যবসায়ী আলোমতির ১ বছরের কারাদ-াদেশসহ ৬ মাদকসেবীর প্রত্যেককে ৩ মাসের কারাদ-াদেশ প্রদান করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান গতকাল শনিবার ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযানকালে গতকাল শনিবার আলমডাঙ্গা স্টেশনের নিকটবর্তী রেললাইনের ঢালের ঝুপড়ির বাসিন্দা রুবেল আলীর স্ত্রী চিহ্নিত মাদকব্যবসায়ী আলোমতি (৩৫) কে আটক করে। এছাড়া একইদিনে বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে মাদকের ডেরা থেকে আটক করেছে আরও ৬ জন মাদকসেবীকে। এরা হলেন উপজেলার কুলপালা গ্রামের মৃত বরকত ম-লের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৬০), একই গ্রামের বদর ম-লের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), একই গ্রামের কহর আলীর ছেলে মতিয়ার রহমান (৪২), ভালাইপুর গ্রামের মৃত নিহাল ম-লের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৪০), একই গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে নওশাদ আলী (৫০) ও জেহালার মৃত বাহার আলী ম-লের ছেলে জামাত আলি (৬০)। সংবাদ পেয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান উপস্থিত হন। পরে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদকব্যবসায়ী আলোমতিকে ১ বছরের ও ৬ মাদকসেবীর প্রত্যেককে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদ-াদেশ প্রদান করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় আলমডাঙ্গা থানার এসআই মোহাব্বত আলী, এসআই বিএম আফজাল, এসআই গিয়াস উদ্দিন, এসআই সাইফুল ইসলাম, এএসআই আব্দুল হামিদ ইসলাম, এএসআই মিরাজসহ সঙ্গীয় ফোর্স উপস্থিত ছিলেন।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দু’মাদকব্যবসায়ীর ৬ মাস করে কারাদ-াদেশ দেয়া হয়েছে। জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মাদকব্যবসায়ীদের এ কারাদ-াদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের আবু তালেবের ছেলে ইব্রাহিম (২২) ও নতুনপাড়া গ্রামের কলম মিয়ার ছেলে রাজা (২৩) নিজ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ব্যবসা করে আসছিলো। এক পর্যায়ে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেলিম রেজা গত শনিবার সন্ধ্যায় গোয়ালপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী ইব্রাহিম ও রাজাকে ৫০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করেন এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মাদকব্যবসায়ী দু’জনের প্রত্যেককে ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদ-াদেশ দেন।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনা আইসি পুলিশের মাদকবিরোধী চলমান ধারাবাহিক অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে ৩ জনকে। উদ্ধার করেছে ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজা। দু’জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদ-ে দ-িত করেছেন আদালতের বিচারক। একজনের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা হয়েছে মামলা। গতকাল শনিবার বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শোনিত কুমার গায়েনের নেতৃত্বে এসআই জাহাঙ্গীর আলম, এএসআই লাভলু ও মনির হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান দর্শনা পৌর এলাকার বিভিন্ন মহল্লায়। অভিযান চলাকালীন শান্তিপাড়া থেকে গ্রেফতার করে দামুড়হুদার ফকিরপাড়ার মহিদুল ইসলামের ছেলে মোমিনকে (৩২)। পুলিশ বলেছে, গ্রেফতারকৃত মোমিনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট। এ ঘটনায় এএসআই লাভলু বাদি হয়ে গতকালই মোমিনের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। দর্শনা রামনগরের আকবর আলীর ছেলে টিটোন (২৪) ও আনোয়ার হোসেনের ছেলে তুহিনকে (২৬) ২ পুরিয়া গাঁজাসহ গ্রেফতার করা হয়। তুহিন ও টিটোনকে রাত ৮টায় দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল হাসানের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে দু’জনকে কারাদ-াদেশ দেন আদালতের বিচারক।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় ৩ মাদকসেবীকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক। গতকাল শনিবার দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল হাসান ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। পুলিশ বলেছে, মেহেরপুর বড়বাজারের হামিদুল ইসলামের ছেলে আল মাহমুদ সবুজ (১৯), একই এলাকার নাসিরুল ইসলামের ছেলে রাজন খান (২০) এবং দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের চিৎলা-গোবিন্দহুদার মতিয়ার রহমানের ছেলে মেহেদি হাসান (২১) গতকাল শনিবার দর্শনা বাজার এলাকায় মদ্যপ অবস্থায় মাতলামি করছিলো। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আকরাম হোসেনের নির্দেশে এসআই আব্দুল গফুর সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাদেরকে আটক করেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং ওই তিন মাদকসেবীর বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। আটককৃতরা জরিমানার টাকা নগদে পরিশোধ করলে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আকরাম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।