স্টাফ রিপোর্টার: আরো ৮টি জঙ্গি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখায় একটি তালিকা দিয়েছে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, আল্লাহর দল, ইসলামিক সলিডারিটি ফ্রন্ট, তামীরউদ্দীন বাংলাদেশ, তৌহিদী ট্রাস্ট, হিজবুত তাওহিদ, শাহাদত-ই-নবুয়ত ও জামাত-আস-সাদাত নিষিদ্ধ করার জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক শাখার একজন উপ-সচিব বলেন, নতুন করে ৮টি জঙ্গি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ৮টি জঙ্গি সংগঠন ছাড়াও আরো প্রায় অর্ধশত সংগঠনের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে পুলিশ-ৱ্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছে-ছদ্মনাম ব্যবহার করে জঙ্গি নেতারা সংগঠনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, বিগত জোট সরকারের আমলে জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে শাহাদত-ই-আল হিকমা, হরকাতুল জিহাদ (হুজি), জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ও জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) নিষিদ্ধ করা হয়। নিষিদ্ধ করার পরও হুজি ও জেএমবির কার্যক্রম চলতে থাকে। এখনও হুজি ও জেএমবির কার্যক্রম রয়েছে। বর্তমানে মহাজোট সরকারের আমলে ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করা হয়। চলতি বছরের ১৩ জুন রাতে রাজধানীর কাপ্তানবাজারের একটি হোটেল থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ ৭২ জন হিযবুত তাহরীর সদস্যকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের বর্তমান কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ করেছে গোয়েন্দারা। সর্বশেষ কয়েকদিন আগে বরগুনার দক্ষিণ খাজুরতলা এলাকা থেকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানীসহ ৩১ জঙ্গি গ্রেফতার হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে গোয়েন্দারা। তাদের সহযোগীদের ধরতে ঢাকার মোহাম্মদপুরের বছিলায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। ধৃত জঙ্গিদের কাছ থেকে যেসব তথ্য উদঘাটিত হয়েছে তা গা শিউরে উঠছে পুলিশের কর্তা ব্যক্তিদের। ইতোমধ্যে এসব জঙ্গিদের কাছ একটি হিটলিস্ট উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের কয়েকজন প্রভাবশালী মন্ত্রী ও সুশীল সমাজের একাধিক ব্যক্তিকে হত্যার টার্গেট করা হয়েছিল বলে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছে।
সূত্র জানায়, হিটলিস্ট উদ্ধারের পর সরকারের নীতিনির্ধারকরা হার্ডলাইনে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে। কালো তালিকাভুক্ত জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে আটটি সংগঠনকে নিষিদ্ধের আওতায় আনা হচ্ছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। চলতি মাসের মধ্যে তাদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার কথা রয়েছে। তাছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আরও অর্ধশত সংগঠনের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছে গোয়েন্দারা। যেসব সংগঠনের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে সেগুলো হলো- জামিউতুল ফালাহ, ইসলামিক সলিডারিটি ফ্রন্ট, আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন, আরাকান পিপলস আর্মি, আরাকান মুজাহিদ পার্টি, মিয়ানমার লিবারেশন ফোর্স, রোহিঙ্গা লিবারেশন ফোর্স, রোহিঙ্গা ইনডিপেন্ডেন্স পার্টি, রোহিঙ্গা প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্ট, মুসলিম মিল্লাত, আল হারাত-আল-ইসলামিয়া, ওয়ার্ল্ড ইসলামিক ফ্রন্ট, তৌহিদী জনতা, জুমাআতুল আল সাদাত, তামিরউদ্দীন দ্বীন বাংলাদেশ, আল খিদমত, হিজবুল মাহদি, হিজবুল্লাহ ইসলামী সমাজ, দাওয়াতি কাফেলা, বাংলাদেশ এন্টি টেররিস্ট পার্টি, আল মারকাজুল আল ইসলামী, আল ইসলাম মার্টেনস ব্রিগেড, সত্যবাদ, মুসলিম মিল্লাত, শরিয়া কাউন্সিল, জমিয়ত আহলে হাদিস আন্দোলন, আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশ, তাজির বাংলাদেশ, হায়াতুর ইলাহা, ফোরকান মুভমেন্ট, জামিউতুল এহজিয়া এরতাজ, আনজুমানে তালামিজ ইসলামিয়া, কলেমার জামাত, সাহাবা পরিষদ, কাতেল বাহিনী, মুজাহিদিন-ই-তাজিম, এশার বাহিনী, আল ফাহাদ, হরকাতুল মুজাহিদিন ও জাদিদ আল কায়দা।