স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকায় মা-ছেলেকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের স্বামী আবুল করিম ও তার তৃতীয় স্ত্রী শারমীন মুক্তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেনের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের উপর শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম তা মঞ্জুর করেন। গত বুধবার সন্ধ্যায় কাকরাইলের ৭৯/১ নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলায় শামসুন্নাহার ও তার ছেলে সাজ্জাদুল করিম শাওনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপরই আটক হন চলচ্চিত্র প্রযোজক আবুল করিম ও তার অভিনেত্রী স্ত্রী মুক্তা। এ ঘটনায় নিহত শামসুন্নাহারের ভাই আশরাফ আলী বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে করিম, মুক্তা ও মুক্তার ভাই জনিসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার পর বাড়ির কেয়ারটেকার আবদুল্লাহ নোমান ও গৃহকর্মী রাশিদাকে আটক করেছিল পুলিশ। তাদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) রমনা থানা পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন মানবজমিনকে বলেন, আমরা অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। রিমান্ড আবেদন মঞ্জুরের পর করিম এবং মুক্তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাবে না।
জানা যায়, সবজি বিক্রয় থেকে পিয়াজের আড়ৎ। আড়ৎ থেকে বিত্তশালী হন আবুল করিম। এরপর শুরু করেন চলচ্চিত্র ব্যবসা। ছবি প্রযোজনা। একে একে করেন চার বিয়ে। এর মধ্যে ২০১৩ সালে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের পুলিশ কনস্টেবলের মেয়ে শারমিন জাহান মুক্তা নায়িকা হতে গিয়ে প্রেমে পড়ে যান পঞ্চাশ বছর বয়সী করিমের। ২০১৫ সালে গোপনে বিয়ে করেন তারা। তা ছিল করিমের তৃতীয় বিয়ে। বিষয়টি জানার পর প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহারের সঙ্গে নতুন করে কলহ শুরু হয়। এরপর স্ত্রীর নামে থাকা দোকানসহ বেশকিছু সম্পত্তি নিজের নামে লিখে দিতে চাপ দিলে প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহারের সঙ্গে তার প্রায়ই কলহ হতো। সম্পত্তিসহ বহু বিয়ের সূত্র ধরেই শামসুন্নাহার খুন হয়েছে বলে দাবি তার স্বজনদের। শামসুন্নাহারের ভাই মুফতি আশরাফ আলী জানান, ছবি প্রযোজনা, পরিচালনা ও অভিনয় করতেন আবুল করিম। নায়িকাদের নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন দেশে-বিদেশে। শামসুন্নাহারকে বিয়ে করার পর একে একে চারটি বিয়ে করেন। এতে বাধা দিতেন শামসুন্নাহার। এ নিয়েই কলহ হতো। করিম ও মুক্তা দু’জনে মিলেই পরিকল্পিতভাবে আমার বোনকে হত্যা করেছে। বোনকে বাঁচাতে গিয়ে জীবন দিতে হয়েছে ভাগ্নে শাওনকে।