দামুড়হুদার ভৈরব ও মাথাভাঙ্গা নদীতে বাঁশের বানানো জাল আড়াআড়ি পেতে মাছ শিকার

হারিয়ে যাচ্ছে নদীর নব্যতা
হাসেম রেজা: দামুড়হুদা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দামুড়হুদার ভৈরব ও মাথাভাঙ্গা নদীর কয়েকটি স্থানে বাঁধ দিয়ে ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা হচ্ছে। এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী ও মালোদের দাপটে নদীর মাঝে বাসের বানা ও মশারি আকৃতির জাল দিয়ে বাঁধ সৃষ্টি করে অবাধে প্রতিদিন মাছ ধরা হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নদীর ¯্রােত, মারা যাচ্ছে রেণু পোনা আর মাছের প্রজনন সমস্যা হচ্ছে।
মাছ ধরার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালীরা আড়াআড়িভাবে বাঁশের ফাঁদ পেতেছে। এর ফলে নদীর স্বাভাবিক ¯্রােত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দামুড়হুদা উপজেলার ভৈরব ও মাথাভাঙ্গা নদীতে অবৈধভাবে বাঁশের বেড়া (বানা) দিয়ে ফাঁদ পেতে ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ ধরার প্রতিযোগিতা চলছে। কোথাও কোথাও একই নদীর আধা কিলোমিটারের মধ্যে দু-তিনটি বানা ফাঁদ পেতে পোনা ধরার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ। দিন দিন দেশি মাছের আকাল দেখা দিয়েছে স্থানীয় বাজারগুলোতে। অবৈধভাবে মাছ ধরার এমন দৃশ্য দেখা গেছে দামুড়হুদার সুবুলপুর ও রঘুনাথপুরের ব্রিজের অদুরে। অথচ মৎস্য বিভাগের সেদিকে নজর নেই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আষাঢ় থেকে শ্রাবণ মাস থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী মালোরা নদীগুলোতে মা মাছসহ রেনু পোনা ধরে আসছে। এ ডিম থেকে সদ্যফোটা পোনা সংগ্রহের জন্য মৎস্যজীবীরা প্রবল ¯্রােত ঠেকিয়ে নদীর দুপাশে বাঁশের বেড়া দেয়। এরপর বেড়ায় মশারির চেয়ে সূক্ষ্ম বিশেষ ধরনের জাল পাতে। এই ফাঁদের ভেতর দিয়ে কোনো ধরণের মাছ বের হতে পারে না। ডিমওয়ালা পুঁটি, ট্যাংরা, গচি, শিং, মাগুর, রুই, কাতল, বোয়ালসহ বিভিন্ন জাতের মাছ সহজেই জালে আটকে পড়ে। দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ও কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের সুবুলপুর গিয়ে দেখা যায়, পাশাপাশি চারটি বানা বসানো হয়েছে। নদীর দুই প্রান্তে বেড়া (স্থানীয় ভাষায় বানা) দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। অথচ এ নিয়ে মৎস্য বিভাগের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। ফলে দিন দিন বিলুপ্ত হচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছ। নদীতে বানার মালিকরা বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে আমরা এভাবে বানা দিয়ে মাছ ধরছি। কেউ কোনোদিন এ নিয়ে কিছু বলেনি। স্থানীয়রা বলেন, একটু সচেতনতার অভাবে মাছের পোনা নষ্ট হচ্ছে। নিষিদ্ধ পদ্ধতি ব্যবহার করে মাছ ধরা হচ্ছে। এটা বন্ধ করা উচিত। দামুড়হুদা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আয়ুব হোসেন বলেন, ‘এভাবে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নদী-নালায় এভাবে কেউ মাছ শিকার করতে পারবে না। এনিয়ে আইনি বিধিনিষেধ রয়েছে। কোথাও মাছ ধরার এমন গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়াসহ দু-একদিনের মধ্যে অভিযান চালানো হবে এবং যারা বর্তমানে বানা দিয়ে মাছ শিকার করছে তাদেরকে আমরা নোটিশ দিয়েছি ইতোমধ্যে কেউ কেউ বানা গুটিয়ে নিয়েছে এবং যারা নেয়নি তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে। এছাড়াও আমরা দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল হাসান স্যারের সাথেও কথা হয়েছে।