লগ্নিকারীরা টাকা ফেরতের আশায় গুনছে প্রহর
বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের দোস্ত গ্রামের সেই মালেক বাড়ি ফিরেছেন। তিনি বেগমপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে মাসিক ডিপিএস আদায়ের নামে ৪ শতাধিক গ্রাহকের নিকট থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আদায় করে লাপাত্তা হন। এহসান এস বাংলাদেশ নামের একটি এনজিওর নামে এ টাকা আদায় করা হয় বলে অভিযোগকারীরা জানিয়ে বলেছে, দীর্ঘদিন পর মালেক নিজ গ্রামে ফিরেছে। অর্থ লগ্নিকারী গ্রাহকরা তাদের কষ্টার্জিত টাকা ফেরত না পেয়ে তাদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপাক্ষোভ। গ্রামেরই কিছু ব্যক্তি মালেককে রক্ষা করার পায়তারা করছে।
অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৮ সালে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের ঘরজামাই গফুর মুন্সির ছেলে আব্দুল মালেক ও একই গ্রামের জবেদ আলী ম-লের ছেলে দাউদ হোসেন বিভিন্ন মেয়াদে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক পরিচালিত এহসান এস এনজিও খুলে বসে। পরিবারের নারীদের টার্গেট করে ১শ থেকে ৫শ টাকা হারে মাসিক সঞ্চয় আদায়ের মাধ্যমে দোস্ত, কুন্দিপুর, ডিহি, সুবদপুর, ঝাঝরি, বেগমপুরসহ আশপাশ এলাকার ৪ শতাধিক গ্রাহক সংগ্রহ করে তারা। গ্রাহকদের বইয়ে ৮ থেকে ১১ হাজার টাকা জমা পর্যন্ত সঞ্চয় জমা হয়। গ্রাহকদের মধ্যে যাদের বইয়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে সে সমস্ত গ্রাহকরা তাদের সঞ্চয়সহ লভ্যাংশর টাকা ফেরত পেতে প্রতারক মালেক ও দাউদের নিকট ধর্ণা দিতে থাকে। টাকা না দিয়ে তারা আজকাল করে ঘুরাতে থাকে। পরে গ্রাহকরা জানতে পারে বর্তমানে এহসান এস নামের কোন প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সন্দেহ এবং শঙ্কা ঘণিভূত হয় গ্রাহকদের মধ্যে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সঞ্চয় আদায়কারী আব্দুল মালেকের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। অবস্থা বেগতিক বুঝে গত ২৬ এপ্রিল ২০১৫ সালে রাতের আঁধারে পরিবার পরিজন নিয়ে এলাকা ছেড়ে লাপাত্তা হয়ে যায় মালেক। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, পাবনা জেলা থেকে প্রতারক মালেক এখানে এসে লেবাস লাগিয়ে আমাদের সাথে এত বড় প্রতারণা করবে এটা কেউ কল্পনাই করতে পারেনি। পাশ বইয়ের ওপর যে সমস্ত ইসলামিক কথাবার্তা লেখা আছে তাতে যে কারো মনে সন্দেহ থাকার কথা না। সদস্য সংগ্রহের জন্য প্রথমে পরিবারের নারীদেরকে টার্গেট করে সদস্য করে নেয়। পরে একই পরিবারে একাধিক সদস্য তৈরি হয়ে যায়। অভিযোগকারীরা বলেন, মালেক আমাদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেছে সেই টাকা দিয়ে সেসময় নামে বেনামে বেশকিছু জমি কেনে। আব্দুল মালেক লাপাত্তা হয়ে পড়ায় হতদরিদ্র গ্রাহকরা তাদের কষ্টার্জিত সঞ্চিত টাকা ফেরত না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে গত এক সপ্তাহ আগে মালেক এলাকার কতিপয় দালালের যোগসাজসে দোস্ত গ্রামে ফিরেছে। মালেক দোস্ত গ্রামে ফিরলেও এখন পর্যন্ত কোনো গ্রাহক তাদের সঞ্চিত আমানত ফেরত পাইনি বলে জানিয়েছে। ফলে টাকা ফেরত না পাওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। এ ব্যাপারে মালেক বলেন, গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতেই বাড়িতে এসেছি।