তিন নারী চোরের এক জন পাকড়াও : পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বর্হিবিভাগে লাইনে দাঁড়ানো নারীর পেছনে রোগী সেজে ছদ্মবেশে চুরি

স্টাফ রিপোটার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বর্হিবিভাগে ছদ্মবেশে তিন নারী চোর তিন নারীর ব্যাগ থেকে টাকা চুরি করেছে। হাতে নাতে ধরা পড়েছে এক নারী। দুজন নারী পালিয়ে গেলেও তাদের পরিচয় যেমন দেয়নি ধরাপড়া নারী, তেমনই ধরাপড়েও একেক সময় একেক রকম নাম ঠিকানা বলে বিভ্রান্ত করছে ওই নারী।
ধরাপড়া নারী প্রথমে পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছে, “নাম শিউলী। বয়স ৩৫ বছর। চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার ব্রিজের নিকট বসবাস করি আমরা। স্বামী নিশান রিকশা চালায়।” পরিচয় সঠিক নয় বলে ধমক দিতেই শিউলী বলেছে, বাড়ি রেলপাড়ায়। এ ঠিকানাও ভুল বলে দাবি করার সাথে সাথে শিউলী বলেছে, আমাদের বাড়ি কুষ্টিয়া থানা পাড়ায়। সাথে থাকা অপর দু’নারীর পরিচয়? শিউলী বলেছে, “ওদের সাথে দুদিন আগে পরিচয়। নাম ঠিকানা জানিনে।”
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে, আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়া ঘোণাপাড়ার আক্তারুল ইসলামের স্ত্রী আকেদা খাতুন, চুয়াডাঙ্গা তালতলার হানেফ আলীর স্ত্রী রংপতি সদর হাসপাতালের বর্হিবিভাগে টিকিট নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ান। এ সময় দু’নারী দু’জনের পেছনে দাড়িয়ে ব্যাগ টানাটানি করে। কিছুক্ষণ পর রংপতি দেখেন তার ব্যাগে থাকা ৮শ টাকা নেই। আকেদা খাতুনের ব্যাগ থেকে চুরি হয়েছে ১৩শ টাকা। রংপতি কালবিলম্ব না করে তার পেছনে থাকা ওই নারীকে খুঁজতে শুরু করেন। পাশেই পেয়ে যান ওই নারীকে। নারীকে ধরতেই আমি টাকা চুরি করিনি বলে পালানোর চেষ্টা করে। কাছে থাকা কিছু টাকা ছিটিয়ে দিয়ে সটকাতে চাইলেও উপস্থিত নারীরা তাকে জাপটে ধরে। পাশেই ছিলো পুলিশের এক নারী সদস্যসহ তিন জন। নায়েক মোস্তাফিজুর তার নারী সদস্যের মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করে সদর থানায় হস্তান্তর করেন। তবে গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পার্যন্ত ওই নারীর বিরুদ্ধে কেউ বাদী হয়ে মামলা রুজু করেননি। ওই নারী ধরাপড়ার পর জানা যানা যায়, হাসপাতালের বর্হিবিভাগেরই দ্বিতীয় তলায় ২শ ৯ নম্বর কক্ষের সামনের লাইনে থাকা অবস্থায় চোরের কবলে পড়েছেন সোনিয়া খাতুন নামের এক নারী। তিনি দামুড়হুদা বাস্তপুরের আসাদুল হকের স্ত্রী। তার নিকট থেকে ৪শ নগদ টাকা ও একটি মোবাইলফোন চুরি করে চম্পট দিয়েছে নারী চোর।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নারী ও শিশু রোগীর ভিড়ের মাঝে রোগী সেজে বহিরাগত কিছু নারী মাঝে মাঝেই চুরি করে। কিছুদিন আগে এক বৃদ্ধার গলা থেকে সোনার চেন খুলে নিয়ে সটকে পড়ে নারী চোর। সিসি ক্যামেরায় তার ছবি ধারণের পরও তাকে দীর্ঘদিনে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এক প্রতারক জীবননগর সদর হাসপাতালের এক রোগীর পিতার নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে। তাকেও দীর্ঘদিন ধরা যায়নি। এসব ঘটনার পর এবার নারীর ব্যাগ থেকে টাকা চোর এক নারী ধরাপড়লেও দু’নারীর হদিস নেই। ধরাপড়ার পরও নারীর বিরুদ্ধে কেউ মামলা না করায় তারাও সহজে পার পাওয়ার পথ অনেকটাই পরিষ্কার।