স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা-কোলকাতার মধ্যে সরাসরি চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাত্রার দীর্ঘ ছয় বছর হতে চলছে। এর যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি সুযোগ-সুবিধা। দর্শনা রেলস্টেশনে ট্রলি ও ইমিগ্রেশনে লোকবল কম থাকায় নির্ধারিত এক ঘণ্টা সময়ের মধ্যে ট্রেন ছাড়তে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষের। এছাড়া গতকাল শনিবার অবরোধের কারণে কোলকাতায় ভ্রমণকারী ২৭ যাত্রী দেশে ফেরেননি। রেল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে ট্রলিসংখ্যা বৃদ্ধি ও ইমিগ্রেশনে লোকবল বাড়ানোর কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল ঢাকা-কোলকাতার মধ্যে সরাসরি মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলাচল শুরু হয়। ওই সময় ঢাকা থেকে ৪১৮ জন যাত্রী চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশের দর্শনা ও ভারতের গেঁদে রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশনে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে যাত্রীরা নাখোশ হয়। পরবর্তীতে রেল কর্তৃপক্ষ লোকসানের অজুহাতে রেলের কোচ কিছু কমিয়ে দেয়। এরপর দু দেশের উচ্চ পর্যায়ে এ বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনা শেষে দু দেশের ইমিগ্রেশনে সময় দু ঘণ্টার পরিবর্তে এক ঘণ্টায় নামিয়ে আনা হয়। এরপর যাত্রী সংখা আবার বৃদ্ধি পেতে থাকে। বর্তমানে ৩২৬ আসন বিশিষ্ট মৈত্রী ট্রেনটি বাংলাদেশ থেকে প্রতি শুক্রবার কোলকাতায় যায় এবং পরদিন শনিবার ঢাকায় ফেরত আসে। অপরদিকে, কোলকাতা থেকে ৩৮৬ আসন বিশিষ্ট মৈত্রী ট্রেনটি প্রতি মঙ্গলবার ঢাকায় আসে এবং পরদিন বুধবার কোলকাতায় ফেরত যায়। এ ছয় বছরে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখ্যযোগ্য হারে বেড়েছে। গতকাল শনিবারও কোলকাতা থেকে ৩০৪ জন যাত্রী ঢাকা যাওয়ার কথা থাকলেও দেশে ফেরত এসেছেন ২৭৭ যাত্রী। এসব যাত্রীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে। কারণ বিপুল পরিমাণ যাত্রীর জন্য দর্শনা রেলস্টেশনে মাত্র ৪০টি ট্রলি রয়েছে। যা যাত্রীদের জন্য যথেষ্ট নয় বলে দাবি করেছেন মৈত্রী ট্রেনের যাত্রী ও সংশ্লিষ্টরা।
২০০৮ সালে শুরুতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৪০টি ট্রলি উপহার দিয়েছিলো। এরপর আর কোনো ট্রলি যুক্ত হয়নি। ফলে, প্রতিনিয়ত যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া দর্শনা রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশনের কাজে ধীরগতির কারণে যাত্রীদের ভিড় লেগেই থাকে। ইমিগ্রেশনে ৮টি কম্পিউটার থাকলেও মাত্র চারজন অপারেটর চারটি কম্পিউটার পরিচালনা করেন। লোকবল না থাকায় অবশিষ্ট চারটি কম্পিউটার যেমন চালানো সম্ভব হয়না, তেমনি কম্পিউটার না চলার ফলে যন্ত্রপাতি অচল হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে দর্শনা রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার মীর মো. লিয়াকত আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ট্রলি স্বল্পতার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তিন বছর যাবত লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো সমাধান হয়নি। তবে শিগগিরই ট্রলি পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। লোকবল কম থাকার বিষয়ে দর্শনা ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম মোল্লার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইমিগ্রেশনে ৮টি কম্পিউটার থাকলেও লোকবল স্বল্পতার কারণে বর্তমানে চারজন লোক দিয়ে চারটি কম্পিউটার সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে। লোকবল বাড়ানোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।