ইবি প্রতিনিধি: শিবিরের এক নেতা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগের মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করে দিয়েছে ইবি শাখা ছাত্রশিবির। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও রাসায়নিক প্রযুক্তি অনুষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি তারেক মনোয়ার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাবেক সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও রাসায়নিক বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র মো. শাহিনুজ্জামান ঢাকার কল্যাণপুর থেকে ডিবি পুলিশ কর্তৃক আটক হন। বর্তমানে তারা দুজনেই কারাগারে আছেন।
জানা গেছে, শিবির নেতা মো. শাহীনুজ্জামানের মাস্টার্স পরীক্ষা চলছে। গতকাল সোমবার তার ৫০২ নং কোর্সের পরীক্ষা ছিলো। শাহীনুজ্জামান কারাগারে থাকার কারণে শিবির নেতাকর্মীরা বিভাগীয় সভাপতিকে পরীক্ষা কয়েক দিন পরে নেয়ার ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. শামসুল আলম পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে অনড় থাকলে শিবির নেতারা পরীক্ষা হতে দেবেন না বলে হুমকি দেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে শিবিরের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী বিজ্ঞান অনুষদে ঢুকে পরীক্ষার হলে তালা লাগিয়ে দেন এবং পরীক্ষার্থীদেরকে হল থেকে বের করে দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের কর্মচারী মো. মুরাদ পরীক্ষার খাতা নিয়ে ঢুকতে চাইলেও তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এমনকি পুলিশের মাধ্যমে শিক্ষকরা খাতা নিয়ে যেতে চাইলেও শিবির কর্মীরা তাতে বাধা দেন। এ সময় শিবিরকর্মীরা বিজ্ঞান অনুষদের প্রধান ফটকের কলাপসিবল গেট লাগিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান তাদেরকে সরিয়ে দেয়। ফলে সকাল ন’টায় পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এদিকে বেলা ১১টার দিকে বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানকে নিয়ে প্রথমে এবং পরে বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এ সময় শিবিরের নেতাকর্মীরা বিজ্ঞান ভবনের সামনেই অবস্থান করছিলো। বৈঠকে পরীক্ষা না নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে স্থগিত পরীক্ষাটি কবে অনুষ্ঠিত হবে তার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি শিক্ষকরা। দুপর ২টার দিকে শিবিরনেতাকর্মীরা স্থান ত্যাগ করেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুল্লাহ বলেন, আগামীকাল (মঙ্গলবার) পরীক্ষাটি হওয়ার কথা থাকলেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নির্ধারিত সিডিউলের একদিন আগেই আজকে (সোমবার) পরীক্ষা দেয়ার জন্য শিক্ষকরা ছাত্রদেরকে বাধ্য করেন। ফলে সাধারণ ছাত্ররা এ কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। এর সাথে শিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেয়।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, অনিবার্য কারণবশত ৫০২ নং কোর্সের পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে। তবে পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। পরে শিক্ষকদের সাথে বৈঠক করে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে।