স্টাফ রিপোর্টার: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী দেশের প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ মালিক পক্ষের এসব ক্ষেত্রে আগ্রহ কম। শিক্ষামন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কঠোর বার্তা জারির পর এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অংশ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য নিয়োগের জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়ের তিন সদস্যবিশিষ্ট উপাচার্যের প্যানেল প্রস্তাব করেছে। আর দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য না থাকলেও ১৮ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য নিয়োগে কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না। উপ-উপাচার্যের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ৬৫। আর কোষাধ্যক্ষের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ৪৩। দেশে বর্তমানে ৯৫ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী। উচ্চশিক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের সনদে স্বাক্ষর করবেন রাষ্ট্রপতি নিয়োগকৃত উপাচার্য। কিন্তু উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণরা মূল সনদ নিতে পারছেন না। আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নিয়োগকৃত অস্থায়ী উপাচার্য মূল সনদে স্বাক্ষর করছেন। যার আইনগত কোনো ভিত্তিও নেই। এসব সনদধারীর ভবিষ্যত সম্পর্কে ইতোমধ্যে সতর্কও করে দিয়েছে ইউজিসি।
উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ নিয়োগে কেন আগ্রহ কম সে বিষয়ে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এসব পদে নিয়োগ দিতে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া যোগ্য প্রার্থী পাওয়া গেলেও তাদের পেছনে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫ থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়। অথচ তাদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তেমন কোনো উপকার হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে- ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য নিয়োগের জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়ের তিন সদস্যবিশিষ্ট উপাচার্যের প্যানেল প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি চলতি বছরের ১৫ মে, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর, মানারত ইন্টারন্যাশনাল, ফেনী, রবীন্দ্র মৈত্রী ও স্টেট ইউনিভার্সিটি চলতি বছরের ১৩ জুলাই, রয়েল ইউনিভার্সিটি চলতি বছরের ১ জানুয়ারি, নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ মে, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি গত বছরের ২৪ নভেম্বর উপাচার্য নিয়োগের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ের পাঠিয়েছে। যা প্রক্রিয়াধীন।
ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, উপাচার্য না থাকলেও এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেই ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি), গণ বিশ্ববিদ্যালয়, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, চুয়াডাঙ্গার ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি, শরিয়তপুরের জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লার ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস, গাজীপুরে অবস্থিত জার্মান ইউনিভার্সিটি, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি, মানিকগঞ্জের এনপিআই ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি এবং ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের।