গাংনী প্রতিনিধি: চুমকি খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধূকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিলেন স্বামী। অবুঝ দুই শিশু সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য চাল কিনতে বলার অপরাধে শিশুদের সামনেই বেধড়ক পিটিয়েছে পাষ- স্বামী। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মেহেরপুর গাংনীর চৌগাছা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বউ পেটানো স্বামীর নাম আদালত হোসেন। আর তাইতো এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলে বলেছেন- আদালতের এ কেমন বিচার। আহত চুমকি খাতুন বলেন, পিতার বাড়ি থেকে গতকাল বুধবার সকালে তিনি চৌগাছা গ্রামে স্বামীর বাড়িতে ফেরেন। ঘরে চাল না থাকায় রান্না করতে পারিনি। ছেলে কিরণ (৮) ও মেয়ে কেয়া (৫) সারাদিন ভাত খেতে পাইনি। স্বামীকে চাল কিনতে বলায় ক্ষেপে যান। একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে মারধর করে। প্রতিবেশীদের সহায়তায় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন চুমকি।
চৌগাছা গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আদালত হোসেনের সাথে কসবা গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে চুমকি খাতুনের বিয়ে হয় ১০ বছর আগে। দাম্পত্য জীবনে সুখ কী তা টের পাইনি বলে, চোখের পানি ফেলেন চুমকি। আদালত হোসেন নেশাগ্রস্ত তাই সংসারে অভাব-অনটন কাটে না উল্লেখ করে গৃহবধু চুমকি বলেন, নেশার টাকা জোগাড় করার জন্য সংসারের অনেক কিছু বিক্রি করেছে। ঠিকমতো আয় রোজগার করে না। বিয়ের সময় ৩০ হাজার এবং পরে আরও ২০ হাজার টাকা যৌতুক নেয়। বিদেশ যাওয়ার জন্য আরো দুই লাখ টাকা চেয়েছে। আমার পিতার পরিবারের পক্ষে এতো টাকা দেয়া সম্ভব নয়। এ কারণে প্রতিদিনই আমার ওপর শারীরিক নির্যাতন চলে। আমার শাশুড়ি ও স্বামী পরিত্যক্তা ননদ কুলছুম খাতুনও আমাকে মারধর করে। অবুঝ দুটি শিশুকে নিয়ে আমি এখন কী করবো? দুর্বিষহ জীবনের কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেড়ে পড়েন চুমকি। তার কান্না দেখে পাশে থাকা দুই শিশু সন্তানও হাউমাউ করে কান্না শুরু করে। তাদের আর্তনাদে হাসপাতালে উপস্থিত উৎসুক মানুষও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।