কেন পাকিস্তানিরাই বারবার জড়ান ম্যাচ পাতানোয়?

মাথাভাঙ্গা মনিটর: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কুৎসিত ক্ষতটা কিছুদিন পরপরই খুলে যায়। দৃশ্যপট পাল্টায়, পাত্র-পাত্রী বদলায় কিন্তু এই কালো ছায়ার হাত থেকে মুক্তি পায় না ক্রিকেট। হানসি ক্রনিয়ে, আজহারউদ্দিন থেকে হালের শারজিল খান পর্যন্ত প্রত্যেকেই প্রতিভাবান ক্রিকেটার। নিশ্চিতভাবেই ম্যাচ গড়াপেটার নেপথ্যের কারিগরেরা এমন প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের খুঁজে নিয়ে ফাঁদে ফেলেন। এই ‘ভাইরাস’ নির্মূলের চেষ্টা করছে আইসিসি, সদস্যদেশগুলোর ক্রিকেট বোর্ডগুলোও চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্র্যাডম্যান, ভিভ রিচার্ডস থেকে শচীন টেন্ডুলকার হয়ে এই জমানার কোহলি-রুটরা যখন আগের প্রজন্মের ক্রিকেট শ্রেষ্ঠত্বকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন, তখন দিনদিন আরও গভীরে পৌঁছাচ্ছে ফিক্সিঙের শিকড়। প্রতিরোধের একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। তাতে গডফাদাররা থেকে যাচ্ছেন আড়ালেই, ফিক্সিং থামছে না, শুধু খেলোয়াড় নিষিদ্ধ হচ্ছেন। ২০০০ সালে আজহারউদ্দিনের কেলেঙ্কারি দিয়ে বড় আঙ্গিকে ধরা পড়ে ফিক্সিং। অজয় জাদেজা ও অজয় শর্মা নিষিদ্ধ হন। এরপর থেকে সদ্য অন্তর্ভুক্ত শারজিল খানকে হিসেবে নিলে মোট ২৫ জন খেলোয়াড় নিষিদ্ধ হয়েছেন। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া বাদে সব টেস্ট খেলুড়ে দেশের কপালেই লেগেছে কলঙ্কের টিকা।

কোনো দেশকে ফিক্সিংয়ের জন্য সরাসরি দায়ী করা যায় না। কিন্তু উপমহাদেশীয় ক্রিকেটারদের, বিশেষ করে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের বারবার ফিক্সিং-সংশ্লিষ্টতার দায় ক্রিকেট বোর্ড এড়াতে পারে না। এখনো পর্যন্ত নিষিদ্ধ হওয়া ২৫ জনের মধ্যে ৮ জন পাকিস্তানি, ৫ জন করে দক্ষিণ আফ্রিকান ও ভারতীয়। উপমহাদেশেই ক্রিকেট সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে উপমহাদেশের ক্রিকেটে সংঘবদ্ধ অপরাধীরা অনেক বেশি সক্রিয়। স্পট ফিক্সিংয়ের উদ্ভবের পর এখন এটা আরও সহজ। তার ওপর ক্রিকেটে এসেছে ফ্র্যাঞ্চাইজি-ভিত্তিক লিগ টুর্নামেন্ট। রীতিমতো বিলিয়ন ডলারের এসব আয়োজনে খেলোয়াড়দের কুপথে চালিত করার জন্য অজুহাত লাগে না। নজরদারি আরও বাড়াতে হবে, সন্দেহ নেই। কিন্তু শুধু খেলোয়াড় নজরদারিতেই কি বন্ধ হবে ফিক্সিং? বোর্ডের সর্ষেতে যে ভূত নেই, সেটা নিশ্চিত হওয়া যায় না। এত প্রতিরোধের মাঝেও কেন পাকিস্তানে ছড়াচ্ছে ফিক্সিং? প্রশ্নটা শুধু পাকিস্তান ক্রিকেটের স্বার্থে নয়। বৈশ্বিক ক্রিকেটের যুগে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়েরা একসঙ্গে খেলছেন। এই ভাইরাস ঠেকাতে না পারলে একদিন প্রতিটি দেশেই মহামারি ছড়িয়ে পড়তে খুব একটা সময় লাগবে না।

Leave a comment