প্রসূতি নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় নাজেহাল হওয়ার ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে ॥ মিলছে না প্রতিকার

হাসপাতালে প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তির পর পরিস্থিতিই পাঠায় ক্লিনিকে
স্টাফ রিপোর্টার: প্রসুতি রোগী নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় মাঝে মাঝেই অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগীর লোকজন। সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রসুতি ওয়ার্ডে ভর্তির পরও পরিস্থিতির শিকার হয়ে রোগী সরিয়ে ক্লিনিকে নেয়ার পর অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে অনেকে। অথচ অভিযোগ অনুুযোগের যেন জায়গায় নেই চুয়াডাঙ্গায়। প্রতিকার হয়ে উঠেছে দুঃস্বপ্ন।
গতপরশু শুক্রবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে প্রসূতিকে সরিয়ে নিয়ে মা ক্লিনিকে নেয়ার পর অস্ত্রোপচার করে ছেলে সন্তান ভূমিষ্ঠ করা হয়। নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তির পর গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে মারা যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সচেতনমহলের অনেকেই উপরোক্ত মন্তব্য করে চুয়াডাঙ্গার নাবাগত সিভিল সার্জনের এদিকে দৃষ্টি দেয়া দরকার বলে মন্তব্য করে বলেন, হাসপাতালের গাইনি কনসালটেন্টদের কেউই বিধি মোতাবেক হাসপাতাল কোয়াটারে থাকেন না। জরুরি অপারেশনের জন্য দায়িত্বশীলদের সকলকে ডেকে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তাদের একেক জনের একেক রকম অজুহাত লেগেই থাকে। অথচ তাদেরকেই অর্থের বিনিময়ে ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারে বা সহযোগিতায় থাকতে দেখা যায়।
জানা গেছে, দামুড়হুদা জয়রামপুরের কৃষক অপুর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কল্পনা খাতুন (২০) গত পরশু প্রসব বেদনায় কাতর হয়ে পড়েন। তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা অবস্থায় তীব্র ব্যথায় কাতর হলেও তেমন চিকিৎসা হচ্ছে না দেখে প্রসূতির লোকজন হতাশ হয়ে পড়েন। তখনই কৌশলে ক্লিনিকের ছদ্মবেশী দালালগুলো বলতে শুরু করে, হাসপাতালে রেখে রোগী মেরে লাভ নেই। যতো দ্রুত ক্লিনিকে নেয়া যাবে ততোই ভালো। প্রসূতি এই কষ্ট থেকে তো রক্ষা পাবে। ঠিকই, সদর হাসপাতালে যখন এই দশা তখন ক্লিনিক ছাড়া উপায় কি। শুক্রবার বিকেলে প্রসূতি কল্পনা খাতুনকে নেয়া হয় হাসপাতাল এলাকারই মা ক্লিনিকে। সেখানে সিজার করে পুত্র সন্তান প্রসব করানো হয়। প্রসূতিকে ক্লিনিকে রাখলেও নবজাতককে দেয়া হয় হাসপাতালে। চিকিৎসার একপর্যায়ে গতকাল শনিবার সকালে নবজাতক মারা যায়। হাসপাতলের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, নবজাতকের মাথায় খুব আঘাত হয়েছে। সে কারণেই সুস্থ করে তোলা সম্ভব হলো না। অপরদিকে অস্ত্রোপাচারকারী চিকিৎসক ডা. তারিক হাসান শাহীনের সাথে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছেন, নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই প্রসূতির প্রসববেদনা দেখা দেয়। সিজার করে নবজাতককে ভূমিষ্ঠ করার সময়ই পরিস্থিতি ভালো ছিলো না। সে কারণেই দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিলো।

Leave a comment