গাংনীতে বাস চাপায় আহত সেই পথচারীর মৃত্যু

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীতে বাস চাপায় আব্দুর রহিম ওরফে রইচ (৫০) নামের এক পথচারী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে গাংনী শহরের কাথুলী মোড়ে দুর্ঘটনার পর গতকাল বুধবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। নিহত আব্দুর রহিম গাংনী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের মৃত ইমান আলীর ছেলে। পেশায় তিনি একজন কৃষক ছিলেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মাথা ও বুকে গুরুতর আঘাত রয়েছে। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে মরদেহ নিয়ে বিকেলে নিজ বাড়িতে পৌঁছান স্বজনরা। বিকেলেই জানাজা শেষে গ্রাম্য কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। ঈদের আগে গাংনী শহরের একটি দোকান থেকে মোবাইলফোন কিনেছিলেন রইচ। বাড়ি নেয়ার পর মোবাইলটি অকেজো হয়ে পড়ে। গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই দোকানে মোবাইল বদলের জন্য গিয়েছিলেন তিনি। ওই দোকান থেকে কয়েক গজ দূরে কাথুলী মোড়ে আনমনাভাবে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক পার হচ্ছিলেন। এ সময় মেহেরপুর থেকে ছেড়ে আসা তামান্না পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী লোকাল বাস (সিলেট-ব-৬৮০০) তাকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা খেয়ে বাসের নিচে চাপা পড়েন। বাস ফেলে চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন বাসটি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে রইচকে উদ্ধার করেছিলেন। কিন্তু ততোক্ষণে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানের ক্ষত দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রথমে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
কর্মজীবনে ঢাকায় গার্মেন্টেসে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন আব্দুর রহিম রইচ। দাম্পত্য জীবনে এক ছেলের জনক। ছেলে রাজাবুল ইসলাম পাখিভ্যান চালক। দুই ছেলে ও স্ত্রীসহ পৃথক সংসার রাজাবুলের। বছর তিনেক আগে রাজাবুলের মা রাহিমা খাতুন মারা গেলে দ্বিতীয় বিয়ে করেন রইচ। ঢাকার চাকরি ছেড়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই তিনি বসবাস করছিলেন। স্বামীকে হারিয়ে দরিদ্র পরিবার নিয়ে অথই সাগরে পড়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, বাসটি থানা হেফাজতে রয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ দায়েরের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ। অভিযোগ পেলেই পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Leave a comment