দর্শনা অফিস: চুয়াডাঙ্গাকে মাদক ও চোরাচালান মুক্তকরণের অঙ্গীকার নিয়েই যেন মাঠে নেমেছে বিজিবি। রাতদিন অভিযান অব্যাহত রেখেছে। চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ডের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক অতিরিক্ত পরিচালক মেজর লুৎফুন কবিরের নির্দেশনায় প্রায় প্রতিদিনই ফেনসিডিল, মদ, ইয়াবা ও চোরাচালানী মালামালসহ আটক করা হচ্ছে বহনকারীদের। সেই সাথে মাদক ও চোরাকারবারের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হচ্ছে মামলা। অব্যাহত অভিযানের অংশ হিসেবেই গতপরশু সোমবার রাতভর ঝটিকা অভিযান চালায় দামুড়হুদার দর্শনা, নিমতলা, সুলতানপুর ও বড়বলদিয়া বিজিবি সদস্যরা। এ অভিযানে উদ্ধার করা হয় ৪৩৮ বোতল ফেনসিডিল ও ১৫ বোতল মদ। আটক করা হয় নারীসহ ১৮ জনকে। দর্শনা পৌর শহরের শান্তিপাড়ার ফারুকের স্ত্রী জোসনাকে মাদকদ্রব্য বিকিকিনি করবে না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার রাত ৪টার দিকে দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের বড়বলদিয়া বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার আরিফুল ইসলাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান নাস্তিপুরে।
বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- এ অভিযানে আটক করা হয় চান্দালী মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৬), বুইদো মালিতার ছেলে নাসির উদ্দিন (৪৫), সোলদার ম-লের ছেলে ইয়াছিন আলী (৪০), শামসুল ইসলামের ছেলে রাহিমুল ইসলাম (৩৫), হামিদুর রহমানের ছেলে রিপন মিয়া (২৩) ও ঝাঁজাডাঙ্গার আব্দুল মালেকের ছেলে মিঠু হোসেনকে (২৪)। আটককৃতদের কাছ থেকে ১৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। গতকাল মঙ্গলবার হাবিলদার আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। একই সময় দামুড়হুদার সুলতানপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার তোতা মিয়ার নেতৃত্বে নায়েক আকবর আলী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান একই ইউনিয়নের ঝাঁজাডাঙ্গা গ্রামের মাদরাসাপাড়ার আমবাগান নামক স্থানে। এ অভিযানে বিজিবি সদস্যরা আটক করেন ঝাঁজাডাঙ্গা গ্রামের আ. রব মিয়ার ছেলে ইব্রাহিম খলিল (২০), আব্দুল মালেকের ছেলে বিপ্লব হোসেন (২০), বদর উদ্দিনের ছেলে ফজলুল হক (২২), শামীম (২১), শামসুল হকের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (২৩) ও জয়রামপুরের হাফিজুর রহমানের ছেলে সাজ্জাদ হোসেনকে (৩৪)। বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- আটককৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১৫৬ বোতল ফেনসিডিল। এ ঘটনায় নায়েক আকবর আলী বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার দামুড়হুদা থানায় আটককৃত ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। গত সোমবার রাত দেড়টার দিকে দর্শনা নিমতলা বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবদোর আব্দুল হালীম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান দর্শনা জয়নগর মাঠে। বিজিবি সদস্যরা ওই মাঠ থেকে আটক করে- জয়নগরের নুর হোসেনের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন ওরফে জামাই বাবলু (৪৮) ও মুর্শিদ আলীর ছেলে আব্দুস সামাদকে (৩০)। আটককৃতদের কাছ থেকে ৫২ বোতল ফেনসিডিল ও ১৫ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধারের তথ্য দিয়েছে বিজিবি। নায়েব সুবেদার আব্দুল হালিম বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার জামাই বাবলু ও সামাদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। রাত দুটোর দিকে দর্শনা বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে হাবিলদার ইকবাল হোসেন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে জয়নগর বিএসপি মাঠে মাদকবিরোধী অভিযান চালান। এ অভিযানে বিজিবি সদস্যরা আটক করেন- আব্দুল মোতালেবের ছেলে মাসুদুর রহমান (২৫) ও খলিলুর রহমানের ছেলে সানাউল ইসলামকে (২৮)। আটককৃতদের কাছ থেকে ৫২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। আটককৃত সানাউল ও মাসুদের বিরুদ্ধে হাবিলদার ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। একই সময় দর্শনা বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক নজরুল ইসলাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে দর্শনার বিভিন্ন মহল্লায় মাদকবিরোধী অভিযান চালান। এ অভিযানে আটক করা হয়- দর্শনা ইসলাম বাজারপাড়ার মোহাম্মদ আলীর ছেলে সানোয়ার হোসেনকে (৩৬) ও দর্শনা শান্তিপাড়ার ফারুকের স্ত্রী জোসনাকে (৪৫)। বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- সানোয়ারের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২৬ বোতল ফেনসিডিল। জোসনার কাছ থেকে কোনো প্রকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার না হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় নায়েক নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে গতকালই সানোয়ারের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।