জীবননগর আলীপুর রাখাল শাহ’র মাজারে ক্যাডারদের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ তিনজন আহত : সংঘর্ষের আশঙ্কা

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার আলীপুর গ্রামে রাখাল শাহ’র বার্ষিক ওরশকে ঘিরে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওরশ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারির ক্যাডারদের হামলার শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ তিনজন আহত হয়েছে। এ সময় দু পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ওরশ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে একটি সালিস বৈঠকের মাধ্যমে ঘটনাটি নিস্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওরশ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পদক পৌর কাউন্সিরর খন্দকার আলী আজম ঘটনার সাথে জড়িতদের উত্তম-মধ্যম দিয়ে ছেড়ে দিলেও আহতদের পরিবার দোষীদের এ ধরনের শাস্তিতে খুশি হতে পারেননি। যেকোনো সময় আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, জীবননগর উপজেলার আলীপুর রাখাল শাহ’র মাজার প্রাঙ্গণে তিরোধান দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বার্ষিক ওরশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ওরশকে ঘিরে সেখানে প্রশাসনের কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই জমজমাট মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় আগত নারী ও যুবতীর সাথে বখাটে নানাভাবে অসৌজন্যমলক আচরণ করতে থাকে। একইভাবে মাজারের ওরশ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি খন্দকার আলী আজমের ৫-৬ জন ক্যাডার মেলার প্রবেশ পথে নাচানাচি আর অসংলগ্ন আচরণ করতে থাকে। তাদের এ আচরণের ব্যাপারে আলীপুর দেয়ানপাড়ার খলিলুর রহমানের ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র টিটো (২২) ও আলমগীর হোসেনের ছেলে শুভ (১৭) প্রতিবাদ করায় ওই সব ক্যাডাররা তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং তাদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে। এ সময় তাদেরকে বাঁধা দিতে গিয়ে বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার সোহরাব হোসেন ও মোশাররফ হোসেনও লাঞ্ছিত হন। এ ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং এলাকাবাসী এক জোট হয়ে হামলাকারীদের আস্তানা বাউন্ডারির ভেতরে আটকে ফেলে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে মাজার কমিটির সভাপতি আজিজুল হক, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আলী আজম, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের প্রধানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এক সালিস বৈঠকের আয়োজন করেন। খন্দকার আলী আজম মাইকিঙে বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি অন্যপক্ষের লোকজনের অপরাধ নিজের ঘাড়ে নিয়ে বিচার সালিস করতে সম্মত হন। একপর্যায়ে সালিস সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক হামলাকারীদের খন্দকার আলী আজম নিজ হাতে উত্তম-মধ্যম দেন। কিন্তু সালিসসভার এ বিচারের প্রতি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন হামলার শিকার পরিবার। এ ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসীর সংশয় যেকোনো সময় আবারও দুপক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটতে পারে।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, মাজার প্রাঙ্গণে মারামারির কথা শুনেছি এবং বিষয়টি আপসের কথাও শুনেছি। সরজমিনে দেখা গেছে একদিকে মারামারি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা অন্যদিকে মাজারের উত্তরপার্শ্বে বাঁশবাগানের ভেতরে জটলাকারে বসে গাঁজা সেবনের উৎসব চলছে। একটি সূত্র বলছে, গাঁজা সেবনের জন্যই নাকি ওই বাঁশ বাগানটি নির্ধারিত করা হয়েছে।