স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) দশ জঙ্গির ডেথ রেফারেন্সের নথিপত্র নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টে এসেছে। গতকাল রোববার হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) ডেথ রেফারেন্সের নথি আসার বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেন। গত ২০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলার একটিতে দোষী সাব্যস্ত করে দশ জঙ্গিকে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকরের আগে হাইকোর্টের অনুমতি প্রয়োজন হয়। এটাই ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। ডেথ রেফারেন্সের পাশাপাশি বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করে থাকেন।
২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই ) নূর হোসেন একটি মামলা দায়ের করেন। ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল আটজনকে আসামি করে মামলার চার্জশিট দেয়া হয়। পরে ২০০৯ সালের ২৯ জুন আরও নয়জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হয়। এরপর ২০১০ সালে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা-২ ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়। বিচার শেষে গত ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গিকে গুলি করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। অপর চারজনকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১০ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনের এ দুই মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে অন্য একটি মামলায়। এ কারণে তার নাম এ মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৯ জনকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ মামলায় চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেন ট্রাইব্যুনাল। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- ওয়াসিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলান শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই এবং মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।