অনিয়ম ধরেই বদলি হলেন স্টেশন মাস্টার

চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশন নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের অন্ত নেই

স্টাফ রিপোর্টার: গত ১৩ দিন আগে ঘুরে গেলেন বাংলাদেশ সরকারের রেল পরিদর্শক আখতারুজ্জামান হায়দার। তিনি বেশকিছু অনিয়ম ধরেছিলেন এবং রেলওয়ের রাজশাহী অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ চুয়াডাঙ্গার রেলওয়ের কর্তৃপক্ষকে অনিয়মগুলো দ্রুত প্রতিকারের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছিলেন। চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ের স্টেশন মাস্টারসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী কথাও দিয়েছিলেন আগামী সাতদিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। বেশ কয়েকজন যাত্রীদের অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের রেল পরিদর্শক আখতারুজ্জামান হায়দার কী বলে গেলেন আর এরা কী করলেন। এখনো রাতে বিদ্যুত চলে গেলে চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনে ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করে। ঠিক করা হয়নি আইপিএস ও সৌর বিদ্যুতের যন্ত্রটি। বাতি ঘরটি  এখনো বাতিম্যানসহ স্টেশনের কয়েকজন স্টাফ বসতবাড়ি হিসেবে ব্যবহার করছেন। স্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাত রেল পরিদর্শককে কথা দিয়েছিলেন আগামী সাতদিনের মধ্যে বাতিঘরটি খালি করে দেয়ার জন্য। কিন্তু সেটাও করা হয়নি।  প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাগারে সব সময় থাকে তালাবদ্ধ। সেখানে একজন নারী ওয়েটিংম্যান আছে তাকে তো ঠিকমতো ডিউটি করতে দেখাই যায় না। দুর্গন্ধেভরা দ্বিতীয় শ্রেণির বিশ্রামাগারটিই শুধু যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য সব সময় খোলা থাকে। কিন্তু খোলা থাকলে কী হবে, রেল স্টেশনে কোনো গণশৌচাগার না থাকায় বর্তমানে দ্বিতীয় শ্রেণর বিশ্রামাগারটি যাত্রীসহ আশপাশের জনগণ গণশৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করছে। আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি আলাদা। বাবুরা পরিদর্শনে এলে ওটা একটু-আধটু করা লাগে, বাকিটা বর্তমান চিত্র। অনিয়মগুলো ধরলে কী হবে, নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করার মতো মানুষের অভাব। চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনের বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ার পর স্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাতকে বদলি করা হয়েছে। গতপরশু তিনি তার নতুন কর্মস্থল মোবারকগঞ্জ রেল স্টেশনে যোগদান করেন এবং নতুন স্টেশন মাস্টার হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় যোগদান করলেন মিজানুর রহমান। এর আগে তিনি ছিলেন কুষ্টিয়ার জগতি।

উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের রেল পরিদর্শক আখতারুজ্জামান হায়দার চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশন পরিদর্শনে আসেন। তিনি বেশকিছু অনিয়ম ধরেন এবং রাজশাহী অঞ্চলের রেলওয়ে ম্যানেজার অসিম কুমার তালুকদারসহ চুয়াডাঙ্গার রেল কর্তৃপক্ষকে প্রতিকারের নির্দেশ দিয়ে যান। তারা কথাও দিয়েছিলেন আগামী সাতদিনের মধ্যে এর প্রতিকার করার জন্য। সাতদিন পার হলেও কথা দিয়ে কথা রাখেনি রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গার রেল কর্তৃপক্ষ। গতকাল সকালে এক যাত্রী গল্পে গল্পে আক্ষেপ করে বলেই ফেললেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আসবে যাবে অনিয়ম ধরবে অনিয়মগুলো ঠিক করার নির্দেশ দিবে। যাদের ওপর নির্দেশ দিবে তারা গদবাঁধা কথাগুলো গড়গড় করে বলে ফেলবে আগামী এতোদিনের মধ্যে সব ঠিক করে দিবো। বাবু চলে গেলে তারা সবায় গা ঝাড়া দিয়ে বলে, যাক আগামী কয়েক বছর তো নিশ্চিন্তে থাকা যাবে। আসলে চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনের অনিয়মগুলো যেনো নিয়মে পরিনত হয়েছে।

Leave a comment