মারা গেলেন অগ্নিদগ্ধ সংগ্রামী নারী হাবিবা : তানভীর চিকিৎসাধীন

চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ায় নতুন গ্যাস সিলিন্ডারের নির্গত গ্যাসে আগুন

 

স্টাফ রিপোর্টার: অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ২০ দিনের মাথায় মারা গেলেন সংগ্রামী নারী হাবিবা সুলতানা (৫০)। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতরাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান। একই সাথে অগ্নিদগ্ধ ছেলে ৭ম শ্রেণির ছাত্র খন্দকার তানভীর আহমেদ একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক। মৃতদেহ অ্যাম্বুলেন্সযোগে গতরাতেই আন্দুলবাড়িয়ার উদ্দেশে নেয়ার প্রক্রিয়া করা হয়।

আগুনে পুড়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া সংগ্রামী নারী হাবিবা সুলতানা চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া রাজধানীপাড়ার মরহুম খন্দকার নাসির উদ্দীনের স্ত্রী। গত ২১ জুলাই দুপুরের পর নিজেদের বাড়ির রান্নাঘরে নতুন গ্যাস সিলিন্ডার ও চুলার পাইপ দিয়ে নির্গত গ্যাসে আগুন ধরে মা ও ছেলে অগ্নিদগ্ধ হয়। খন্দকার নাসির উদ্দীন সংবাদপত্র এজেন্ট ছিলেন। তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সময় রেখে যান শিশু দু কন্যা ও এক ছেলে। এদের নিয়ে সংগ্রাম শুরু হয় স্ত্রী হাবিবা সুলতানার। তিনি সংবাদপত্রের এজেন্টের দায়িত্ব ঘাড়ে তুলে নিয়ে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া করাতে থাকেন। বড় মেয়ে সেলফোন কোম্পানিতে কর্মরত। ছোট মেয়ে কলেজছাত্রী। ছেলে খন্দকার তানভীর আহমেদ আন্দুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র।

প্রতিবেশীরা জানান, গত ২০ জুলাই মা ছেলে দোকান থেকে নতুন গ্যাস সিলিন্ডার ও গ্যাসের চুলা কেনেন। নিজেদের বাড়িতে নিয়ে তারা গ্যাসের চুলা জ্বালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরদিন শুক্রবার ওই চুলা জ্বালাতে ব্যর্থ হয়ে রান্নাঘরের কাঠের চুলায় রান্নার জন্য আগুন দিতেই দুপ করে জ্বলে ওঠে। রান্নাঘরে আগুনের কুণ্ডলি পাকায়। তাতে মা ও ছেলে অগ্নিদগ্ধ হয়। এদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ওইদিনই মা-ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। ঘটনার দিন রাতেই মা-ছেলেকে নেয়া হয় ঢাকায়। ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অগ্নিদগ্ধ মা ও ছেলের চিকিৎসা চলছিলো। এর মধ্যে গতরাত ১০টার দিকে মারা গেলেন মা হাবিবা সুলতানা। গতরাতে মা মারা গেলেও এ খবর তার ছেলে পাশেই চিকিৎসাধীন তানভীরকে দেয়া সম্ভব হয়নি।

রাতে মেয়ে মিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, রাতেই মায়ের মৃতদেহ অ্যাম্বুলেন্সযোগে বাড়ি আন্দুলবাড়িয়ার উদ্দেশে নেয়া হচ্ছে। সকালে পৌঁছুবে। দুপুর নাগাদ দাফন কাজ সম্পন্ন করা হতে পারে।