গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : ঠিকাদারের ইচ্ছা মাফিক চলে রোগীদের পথ্য সরবরাহ

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোগীদের অল্প ও নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। ভর্তিকৃত রোগীদের জন্য যে পরিমাণ খাবার সরবরাহ করার কথা তা দিয়ে অর্ধেক পরিমাণ খাবার দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে মাছ মাংস ও তেল সরবরাহ করা হয় প্রয়োজনের তুলনায় কম। এমন অভিযোগ করে খাদ্য নিয়ে অব্যবস্থাপনার করুণ চিত্র তুলে ধরেছেন ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজনরা। তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলেছে তাদের কিছুই করার নেই।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, মাথাপিছু রোগীর জন্য প্রতিদিন পাউরুটি ২৪৪ গ্রাম, চাল ৪শ গ্রাম, তেল ৪০ গ্রাম, মাংস (খাসি) ২৫৪ গ্রাম, মুরগী (দেশী) ২৮২ গ্রাম, মাছ (রুই, কাতল, মৃগেল) ২৮২ গ্রাম, মাছ (গ্রাসকার্প,সিলভার কার্প, আমেরিকান রুই) ৩৩৮ গ্রাম, পাঙ্গাস ৪২৩ গ্রাম, সবজি ৩৫০ গ্রাম, পিয়াজ ৫০ গ্রাম রসুন ২০ গ্রাম, জিরা পাঁচ গ্রাম, আদা পাঁচ গ্রাম, তেজপাতা পাঁচ গ্রাম, এলাচ ১০ গ্রাম, দারুচিনি ১০ গ্রাম ও লবঙ্গ পাঁচ গ্রাম সরবরাহ করার নিয়ম রয়েছে।

এছাড়াও রোগীদেরকে সপ্তাহে তিনদিন মাংস ও চারদিন মাছ সরবরাহ করার কথা থাকলেও মাত্র একদিন মাংস সরবরাহ করা হয়। রুই মাছের বদলে দেয়া হয় সিলভার কার্প। আদা তেজপাতা ও জিরা সরবরাহ করা হয় না। মাছের মাথা ও লেজ বাদ দিয়ে রোগীদেরকে খাবার দেয়ার নিয়ম থাকলেও তা উপেক্ষিত। সকালের নাস্তায় দেয়া পাউরুটির পরিমাণ কম এবং তা বাসি বলে অভিযোগ রোগীদের। রোগী সাধারণ ওই খাবার খেতে চান না। চিকন চালের বদলে রোগীদেরকে খাওয়ানো হয় মোটা ও নিম্নমানের চাল।

আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও নার্সিং সুপারভাইজারের উপস্থিতিতে সরবরাহকৃত মালামাল রান্নার জন্য প্রস্তুতির কথা বলা হলেও তা করা হয় না। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার তার ইচ্ছা মাফিক ও নিম্নমানের ও কম পণ্য সরবরাহ করে। এদিকে মাস শেষে খাসির বদলে ব্রয়লার ও রুয়েই বদলে সিলভার কার্প দেয়া হলেও সরকারি নিয়ম খাসি ও রুই মাছের বিল উত্তোলন করা হয়। গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওয়ার্ড থেকে রোগীদের খাবারের তালিকায় মাংসের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু আট কেজি মাংসের বদলে চার কেজি সিলভার কার্প মাছ দেয়া হয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

নার্সিং সুপারভাইজার মমতাজ জানান, মাস ছয়েক আগে তিনি খাবার পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়ম দেখতে পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা বিষয়টি নিজেই দেখবেন বলে জানান। আবাসিক মেডিকেল অফিসার এমকে রেজা জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি হতাশ। স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান জানান, তিনি প্রশিক্ষণে রয়েছে। বিষয়টি দেখবেন এবং ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।