মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করেছে। জেলার ৪টি থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ পৃথক ৭টি অভিযান চালিয়ে ১০ অ্যাম্পুল ঘুমের ইনজেকশন, ৬৭ পিস ইয়াবা, ২শ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেছে। মাদক সংশ্লিষ্ট ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চুয়াডাঙ্গাস্থ কর্মকর্তারাও একটু নড়েচড়ে বসেছেন। তারা গতকাল অভিযান চালিয়ে ৫ গ্রাম হেরোইনসহ এক নারীকে ধরে পুলিশে দিয়েছে। জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গতরাত ৯টার দিকে জেলা শহরের শান্তিপাড়ার শিপরার বাড়ির অদূরবর্তী স্থানে অভিযান চালিয়ে একইপাড়ার সুরুজ আলীকে (২৭) আটক করে। তার নিকট থেকে ১০ অ্যাম্পুল ঘুমের ইনজেকশন উদ্ধার করা হয়। পুলিশ এ তথ্য জানিয়ে দেয়া বলেছে, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মুহিতুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে সুরুজকে আটক করেন। সে শান্তিপাড়ার রুহুল আমিনের ছেলে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ভালাইপুর গ্রামে অভিযান চালিয়েছে হানেফ ম-লকে ১শ গ্রাম গাজাসহ আটক করে। ডিবি এসআই জগদীশ চন্দ্র বসু সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হানেফকে আটক করেন। হানেফ (৩২) ওই গ্রামের মৃত আবুল ম-ল। পরে মামলাহ আলমডাঙ্গায় থানায় হস্তান্তর করা হয়। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই জসিম উদ্দীন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বেলগাছি মুসলিমপাড়ার অদূরবর্তী বুজরুকগড়গড়ি রাস্তায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেন কাইজার হোসেনকে। তার নিকট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১২ পিস ইয়াবা। সে জেলা শহরের বাগানপাড়ার মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে। গতকাল সন্ধ্যায় তাকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়। এদিকে চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ইন্সপেক্টর সরদার মফিজুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বেলগাছি মুসলিমপাড়ায় অভিযান চালান। মর্জিনা খাতুনকে আটক করেন। তার নিকট থেকে ৫ গ্রাম পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযান পরিচালনাকারী অফিসার। আফছার আলীর স্ত্রী মর্জিনা খাতুনকে (৫০) মামলাসহ গতকালই সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ১শ গ্রাম গাঁজাসহ গাঁজা ব্যবসায়ী গোবিন্দপুরের শহিদুল ওরফে সবদুলকে আটক করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোবিন্দপুর হরিতলায় গাঁজা বিক্রিকালে শহিদুলকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে পুলিশ ১শ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করে। জানা গেছে,আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল গনির ছেলে গাঁজা ব্যবসায়ী শহিদুল ওরফে সবদুল (২২) দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গাঁজা ব্যবসা করে আসছিল। গতকাল সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গা থানার এসআই একরাম ও এএসআই হুমায়ন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোবিন্দপুর হরিতলায় অভিযান চালায়। এ সময় হরিতলা আনসারের দোকানের সামনে থেকে শহিদুলকে আটক করে। আটকের পর তার দেহ তল্লাশি করে ১শ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করে। এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেছেন। দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনা আইসি পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করেছে ঈশ্বরচন্দ্রপুর ঈদগাপাড়ার অভিযুক্ত মাদককারবারী শামিমকে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শোনিত কুমার গায়েনের নেতৃত্বে এএসআই শামসুদ্দিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালান দর্শনা ফুড গোডাউনের সামনে। এ সময় গ্রেফতার করা হয় দর্শনা পৌর শহরের ঈশ্বরচন্দ্রপুর ঈদগাপাড়ার ইউসুফ আলীর ছেলে শামিমকে। পুলিশ বলেছে, শামিমের দেহ তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট। এ ঘটনায় এএসআই শামসুদ্দিন বাদী হয়ে গতকালই শামিমের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জীবননগর উপজেলার লক্ষ্মীপুরে অভিযান চালিয়ে ২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। এ সময় হাতেনাতে আটক করা হয়েছে লক্ষ্মীপুরের ইয়াবা ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান ওরফে ফজলুকে (৩৫)। রাতেই মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করে তাকে জীবননগর থানাতে সোপর্দ করা হয়েছে। থানা সূত্রে জানা যায়, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আশরাফ আলী বিশ্বাসের নেতৃত্বে ডিবির একটি দল জীবননগর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের লক্ষ্মীপুর ব্রিজের নিকট অভিযান পরিচালনা করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযান কালে গোয়েন্দা পুলিশ ২০ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ লক্ষ্মীপুর গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে ফজলুকে আটক করে। আটক ফজলুর বিরুদ্ধে এসআই আশরাফ বিশ্বাস বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়েরসহ রাতেই তাকে থানায় সোপর্দ করে বলে জানানো হয়েছে।ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা কাউন্সিল মোড় থেকে গতকাল মঙ্গলবিার সকাল ৮টা দিকে ৩০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুলাল হোসেন (৩০) ও বাচ্চু (৪৫) নামের দু যুবককে গ্রেফতার করেছেন কার্পাসডাঙ্গা ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই সুব্রত বিশ্বাসের নির্দেশে এএসআই মাসুদ রানাসহ টহলরত পুলিশ। সন্দেহজনকভাবে দুলাল ও বাচ্চু কার্পাসডাঙ্গা কাউন্সিল মোডে চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলো। এদের পাশে পুলিশ সদস্যরা ইয়াবা ট্যাবলেটের গন্ধ পেয়ে দুলাল ও বাচ্চুকে পুলিশ সদস্যরা তাদের শরীরে তল্লাশি চালান। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে পুলিশ। আটককৃত বাচ্চু দামুড়হুদা উপজেলার হাউলি ইউনিয়নের ডুগডুগি গ্রামের বনি শাহের ছেলে ও দুলাল হোসেন আলমডাঙ্গা উপজেলার নুর হোসেনের ছেলে। তাদেরকে দামুড়হুদা মডেল থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।