বখতিয়ার হোসেন বকুল: দামুড়হুদার চিৎলা হাটপাড়ায় ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় আলামিন (১২) নামের এক শিশুকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। নিহত শিশু আলামিনের মা হাসিনা খাতুন বলেছেন, তিনজন বাড়ির মধ্যে ঢুকে তার ছেলেকে কুপিয়ে খুন করেছে। এর মধ্যে তিনি দুজনকে চিনতে পেরেছেন। তার দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পুলিশ ইব্রাহিম (৪৫) ও জহুরুল (৩৫) নামের দুজনকে গ্রেফতার করেছে। রাত দেড়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়। খবর পেয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। হত্যার নেপথ্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা হাটপাড়ার বাসিন্দা আজিবার রহমান (৪০) গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আম বিক্রির জন্য ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। রাত ১১টার দিকে ৩ ব্যক্তি ওই বাড়িতে ঢুকে আজিবারের বড় ছেলে শিশু আলামিনকে কুপিয়ে খুন করে। নিহত শিশু আলামিনের মা হাসিনা খাতুন বলেছেন, আমি ওই সময় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বারান্দার গ্রিলের তালা খুলে বাইরে যাই। ওই সময় ৩ জন লোক বারান্দায় উঠে আমার ছেলেকে কুপিয়ে খুন করে। এর মধ্যে আমি দুজনকে চিনতে পারি। খবর পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ, ওসি (তদন্ত) জিএম ইমদাদুল হকসহ প্রায় ২৫-৩০ জন পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হন এবং নিহত শিশু আলামিনের মায়ের দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে চিৎলা পশ্চিমপাড়ার মৃত মাদার বক্সের ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী জহুরুল ইসলাম ও একই গ্রামের (ঘরমাজাই) মুরগির মাংস বিক্রেতা বিষ্ণুপুরের ইব্রাহিম হোসেনকে গ্রেফতার করে।
এলাকাবাসী বলেছে, নিহত শিশু আলামিন ও তার ছোট দু ভাই শিমুল (৫) এবং চান্দু (৪) একই স্থানে ঘুমিয়ে ছিলো। তার মা এবং অপর দু ভাইকে কিছুই বললো না অথচ তাকে মেরে ফেললো। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। তাছাড়া মা হাসিনা কাঁদছে ঠিকই কিন্তু চোখে পানি নেই। তিনি যে দুজনের নাম বলেছেন তার মধ্যে একজন বাকপ্রতিবন্ধী এবং অপরজন নিহত শিশু আলামিনের ফুফা। পুলিশ তাদের দুজনকেই ঘুম থেকে তুলে আনে। এলাকাবাসী আরও জানায়, প্রায় ৫-৬ বছর আগে নিহত শিশু আলামিনের দাদি হাদিছন নেছাকেও কুপিয়ে খুন করা হয়েছিলো।
দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ বলেন, লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়েছে। নিহত শিশুর ঘাড়ের দু স্থানে কোপের চিহ্ন আছে। পরকীয়া অথবা জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ওই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত শিশু আলামিনের মাকেও থানায় নেয়া হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের থানাহাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে চারদিকে যে গুজব উঠেছে এটা ওই ঘটনার সাথে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না।
দামুড়হুদায় ঘুমন্ত শিশুকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন ॥ দুজনকে গ্রেফতার করলেও সন্দেহের দৃষ্টিতে মা
