সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘স্বাধীন বিচার বিভাগ’ নামক আইডি খুলে বিচার বিভাগের নামে কটূক্তি

 

গ্রুপ এডমিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতের আদেশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: ফেসবুকে ‘স্বাধীন বিচার বিভাগ’ নামে ভুয়া আইডি খুলে প্রধান বিচারপতিসহ বিচার বিভাগের নামে কটূক্তিকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন আদালত। মেহেরপুরের আমলি আদলতের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ ওই আইডি পরিচালনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গত ৩০ মে আদেশ দিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ মে অফিসে থাকাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্বাধীন বিচার বিভাগ নামক গ্রুপ পেজ হতে কিছু পোস্ট প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ’র দৃষ্টিগোচর হয়। পোস্টসমূহ পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয় যে, কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা মহোদয়ের ছবি অননুমোদিতভাবে প্রোফাইল পিকচার হিসেবে ব্যবহার করে স্বাধীন বিচার বিভাগ নামীয় ফেসবুক গ্রুপ পেজ সৃষ্টি করেছেন। স্বাধীন বিচার বিভাগ নামীয় উক্ত ফেসবুক গ্রুপ পেজে প্রকাশিত পোস্টে দেখা যায় যে, সেখানে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয়কে মেরুদণ্ডহীন ও বাচাল প্রধান বিচারপতি হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে এবং তিনি হেফাজতে ইসলামের দাবি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে দেশকে আফগানিস্তান বানানো শুরু করেছেন মর্মে উল্লেখ করে বিচার বিভাগকে (মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয়ের ছবি সংযুক্ত করত) দুর্নীতিগ্রস্ত মর্মে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশ জুডিসিয়াস সার্ভিস, বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্যগণসহ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সর্বোচ্চ অভিভাবক বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয়কে জুড়িয়ে মিথ্যা ও অশ্লীল শব্দ চয়ন এবং ভাষা প্রয়োগের মাধ্যমে মানহানিকর তথ্যাদি প্রকাশ করে সম্প্রচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয়সহ বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্যগণ ও বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা হয়েছে। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয় শুধু ব্যক্তি নন একটি প্রতিষ্ঠান সেই হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/ব্যক্তিগণ উক্তরূপ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ব্যক্তি প্রধান বিচারপতি মহোদয়কে এবং বিচার বিভাগকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার নিমিত্তে উস্কানি প্রদান করেছেন যা তথ্য ও প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর ৫৭ ধারার অধীনে সুস্পষ্ট অপরাধ।

এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট স্বাধীন বিচার বিভাগ নামীয় ফেসবুক গ্রুপের গ্রুফ এডমিনসহ  ওই পোস্টে মিথ্যা, অশ্লীল এবং মানহানিকর তথ্য আদান-প্রদানকারী ব্যক্তিগণকে তদন্তপূর্বক চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থ্য গ্রহণ করা আবশ্যক।

উপযুক্ত আলোচনা ও পর্যবেক্ষণের আলোকে সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্টসহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০১৬ এর ৫৭ ধারার অধীনে অপরাধ সংক্রান্ত লিখিত তথ্যসংবলিত আদেশনামাটি অফিসার  ইনচার্জ, মেহেরপুর থানা, মেহেরপুরকে স্বয়ং এফআইআরকারী হিসেবে নিজ নাম উল্লেখ করে এফআইআর দায়ের করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অভিযোগ সংক্রান্ত তদন্ত সাপেক্ষ পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করার সুবিধার্থে তদন্তের জন্য মামলাটি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), কুষ্টিয়ার নিকট হস্তান্তরের নির্দেশ প্রদান করা হলো।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), কুষ্টিয়াকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অভিযোগ সংক্রান্তে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারার বিধান মোতাবেক মামলাটি তদন্তপূর্বক জড়িত ব্যক্তিগণকে শনাক্ত করে আগামী ১৬ জুনের মধ্যে ওই আদালতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ প্রদান করেন মেহেরপুর সদর আমলি আদালতের প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ।

Leave a comment