মুজিবনগর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর মিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র প্রিন্স মণ্ডল গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। প্রধান শিক্ষকের বকা খেয়ে সে আত্মহত্যার করে বলে অভিযোগ তুলে শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রধান শিক্ষকসহ তিন জন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। প্রিন্স মণ্ডল বল্লভপুর গ্রামের কৃষক সুখেন মণ্ডলের ছেলে।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রেমপত্র দেয় সপ্তম শ্রেণির ছাত্র প্রিন্স মণ্ডল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে নালিশ দেয় ওই ছাত্রী। গতকাল সকালে প্রধান শিক্ষক নিজ কক্ষে তাদের দুজনকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন। এমন কাজ আর না করতে বলেন ও প্রিন্স মণ্ডলকে বকাবকি করেন তিনি। অভিমানী প্রিন্স মণ্ডল বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরে নিজ ঘরের ছাউনির সাথে রসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে শিক্ষকরা তার বাড়িতে সমবেদনা জ্ঞাপন করতে যান। এসময় গ্রামের উত্তেজিত কিছু যুবক তাদের ওপর চড়াও হয়। এতে আহত হন প্রধান শিক্ষক লুক হরেন্দ্র বিশ্বাস রিঠু, সহকারী প্রধান শিক্ষক পল মজুমদার ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদ সভাপতি বল্লভপুর ইম্মুনুয়ের মিশন চার্চের প্রধান পুরোহিত রেভা. সিমসন মজুমদার। তাদেরকে স্থানীয় দুটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রিন্স মণ্ডলের মা সোনালী মণ্ডল জানান, বিদ্যালয় থেকে আকস্মিক বাড়ি ফিরে ঘরে ঢোকে প্রিন্স। আমি রান্না নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। অনেকক্ষণ ধরে তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে খোঁজ নিতে যায়। তখন ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। বিদ্যালয়ে কি হয়েছে সে বিষয়ে আমাদেরকে কিছুই জানায়নি।
প্রধান শিক্ষক বলেন, কিশোর বয়সে ছেলে-মেয়েরা ভুল করতে পারে। সেটি মাথায় রেখে তাদের শাসন করেছি। কিন্তু সে যে এভাবে অভিমান করে চলে যাবে তা বুঝতে পারিনি।
মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের নিকট লাশ দেয়া হয়েছে, গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় নিজ গ্রাম্য কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ছাত্রের বাবা সুখেন মণ্ডল বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় ইডি মামলা করেছে।