স্টাফ রিপোর্টার: নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের গণদাবি উপেক্ষা করে সরকার নির্বাচন নিয়ে নাটক করছে বলে অভিযোগ করেছেন গণফোরাম সভাপতি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, এখন যা চলছে, তা নাটকীয় নির্বাচন। এর মধ্যে একজন নাটকীয় বিরোধীদলের ভূমিকায় রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিতসভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। সভায় অন্যদের বক্তব্য রাখেন দলটির নির্বাহী সভাপতি মফিজুল ইসলাম খান, মো.শামসুদ্দোহা, সুব্রত চৌধুরী, আলতাফ হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য জগললু হায়দার আফ্রিক প্রমুখ। সভায় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু লিখিত বক্তব্য পড়েন। সভায় তৃণমূলের নেতারা পাতানো নির্বাচনে না গিয়ে গণফোরামের নেতৃত্বে সমমনাদের একটি অর্থবহ জোট গঠনেরও তাগিদ দেন।
ড. কামাল বলেন, এক ব্যক্তির অধীনে নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলছে। নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ভূমিকা ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সুনিশ্চিত করা ছাড়া কোনো নির্বাচনই জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না। সর্বদলীয় সরকার প্রসঙ্গে প্রবীণ এ নেতা বলেন, এখন যে সরকার হয়েছে এটা সর্বদলীয়, নির্দলীয় না অন্তবর্তীকালীন সরকার তা স্পষ্ট করে বোঝা যায় না। এখন সংবিধানে একটি নতুন শব্দ আসা দরকার সেটি হলো নাটকীয় নির্বাচন। এ ধরনের সরকারের অধীনে পাতানো ও প্রতারণার নির্বাচন হলে তার দল অংশগ্রহণ করবে না বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, দেশে একজনই সংবিধান বিশেষজ্ঞ আছেন। আজকে আপনারা এখান থেকেই ঘোষণা করে দেন টিভি ও রেডিওকে জানিয়ে দেন; আর কেউ এ দেশে সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসেবে দাবি করতে পারে না। একজনই আছেন, উনি যা বলেন সেটাই সংবিধান আর উনি যেটাই করেন সেটাই সংবিধান।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে ইঙ্গিত করে ড. কামাল বলেন, নব্বইয়ের স্বৈরাচারকে সরিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্র আনা হলো। এর ধারাবাহিকতায় ২৩ দফার ভিত্তিতে আমরা ১৪ দল ঐক্য করলাম। ২০০৮ সাল পর্যন্ত এ ঐক্য ছিলো। যখন এ মঞ্চে স্বৈরাচারকে তোলা হলো, সেদিন থেকে আমি থাকতে পারলাম না। নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকে বলেন, বিদেশি লোক কেন হস্তক্ষেপ করছে। বিদেশি লোক যদি আমার গণতন্ত্রের পক্ষে সমর্থন দেয়, তখন কার গায়ে লাগে? যারা গণতন্ত্রের অপব্যাখ্যা দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে, তাদের। ড. কামাল অভিযোগ করেন, সরকার ও বিএনপি জোট যৌথভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও লুটপাট করে যাচ্ছে। তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো সংবিধান পরিবর্তন করে এখন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যার কারণে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কারো অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
ড. কামাল হোসেন নতুন মন্ত্রিসভায় শপথ নেয়া ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নাম উল্লেখ করে নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের পক্ষ থেকে আমরা কি তাদের অভিনন্দন জানাতে পারি? সবাই এ সময় না না বলে উঠলে তিনি বলেন, তাহলে কী করার আছে?
‘সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা কোনো টাকাই না-অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের এ বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখনো তিনি মন্ত্রী হয়েছেন। আমি তো অবাক হই। স্বাস্থ্যের কারণে হলেও তাকে মুক্তি দেয়া উচিত ছিলো।