মাথাভাঙ্গা মনিটর: ইন্টারনেট ব্যবহারের সকল বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে মুক্ত ইন্টারনেট ব্যবস্থার দিকেই যাবে চীনের শাসকগোষ্ঠী। গ্রেট ফায়ারওয়াল নামের ইন্টারনেট-ব্যবস্থার ওপর নজরদারি ও সেন্সর-ব্যবস্থাও ভেঙে ফেলবে তারা। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা ভেবেই মুক্ত ইন্টারনেট-ব্যবস্থার দিকে যেতে হবে দেশটিকে। ওয়েবের জনক টিম বার্নার্স লি সম্প্রতি এমন মন্তব্য করেছেন।
নব্বইয়ের দশক থেকেই ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণে রাখতে কড়া ইন্টারনেটনীতি গ্রহণ করে চীন, যা গোল্ডেন শিল্ড প্রকল্প বা গ্রেট ফায়ারওয়াল নামে পরিচিতি পায়। চীন সরকারের গণপ্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইন্টারনেট-ব্যবস্থায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ রেখেছে দেশটি। ২০১২ সালে আইন পাস করে ইন্টারনেট-ব্যবস্থার ওপর কড়া নজরদারি ও ব্যবহারকারীর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে চীন। দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর নাম নিবন্ধনও বাধ্যতামূলক করা হয়। গতকাল ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ফাউন্ডেশন চলতি বছরে ওয়েব ইনডেক্স প্রকাশ করেছে, যাতে ৮১টি দেশের মধ্যে চীনের অবস্থান হয়েছে ৫৭-তে। ২০১২ সালের চেয়ে এ বছর ইন্টারনেট ব্যবহারের সূচকে বড় ধরনের অবনমন ঘটেছে দেশটিতে। ২০১২ সালের ওয়েব ইনডেক্সে ৬১টি দেশের মধ্যে চীনের অবস্থান ছিলো ২৯। ওয়েব ইনডেক্স প্রকাশ সম্পর্কে টিম বার্নার্স লি এক সাক্ষাত্কারে ইন্টারনেট-ব্যবস্থায় নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ১৯৮৯ সালে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব তৈরি করেন টিম বার্নার্স লি। তিনি ওয়েবের জনক হিসেবে পরিচিত।
টিম বার্নার্স লি জানান, নজরদারির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ও দরিদ্র অঞ্চলগুলোতে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার হার কম হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ওয়েব ইনডেক্সে পিছিয়ে গেছে। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও এ বছর পিছিয়ে চারে চলে এসেছে। এবারের ওয়েব ইনডেক্সে শীর্ষ পাঁচটি দেশ হিসেবে স্থান পেয়েছে সুইডেন, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও নিউজিল্যান্ড। সবার নিচে রয়েছে ইয়েমেন। টিম বার্নার্স লি জানান, চীনের অবনমনের বিষয়টি সবচেয়ে শঙ্কার। মুক্ত ইন্টারনেটে চীনের ভবিষ্যত্ দেখছেন তিনি। টিম বার্নার্স লি চীনের গ্রেট ফায়ারওয়াল সম্পর্কে জানান, তিনি আশা করছেন চীনের শাসকগোষ্ঠী অল্প অল্প করে, ধীরেসুস্থে ইন্টারনেটের ওপর থেকে কড়াকড়ি শিথিল করবে। যে দেশে ইন্টারনেটের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়, সে দেশ আরও উন্নতি করে এবং অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধিশালী হয়। চীনের ওয়েব সেন্সরশিপ সিস্টেমে ফেসবুক, টুইটার ও বিদেশি বেশ কিছু খবরের ওয়েবসাইটের ব্যবহার বন্ধ। দেশটির কমিউনিস্ট সরকার মনে করে, দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে এসব ওয়েবসাইটে ছড়ানো নানা কনটেন্ট।