চুয়াডাঙ্গা তালতলা পশুহাটপাড়ার একটি চক্র নিয়ে চুমকা পুরো মহল্লা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা তালতলা পশুহাটপাড়ার একটি বাড়িতে দিনভর এক যুবককে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। বিষয়টি প্রতিবেশীদের মধ্যে জানাজানি হলে বিকেলে একটি অটোবাইকে তুলে দেয়া হয়। অটোর পেছনে ছোটে ৪-৫টি মোটরসাইকেলযোগে ৬-৭ জন যুবক। এরা ওই নির্যাতনকারীদেরই লোক।
যে বাড়িতে নিয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত যুবককে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে সেই বাড়ি নিয়েই শুধু নয়, ওই চক্রের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোপনে স্থানীয়দের কয়েকজন অভিন্ন ভাষায় বলেছেন কৌশলে যুবক ডেকে নিয়ে আটকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে অর্থ আদায় করা হয়। ওদের রয়েছে বিশাল চক্র। কেউ কিছু বললেই তাকে মারপিট করা হয়।
গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে আনুমানিক ২৪-২৫ বছর বয়সী এক যুবককে তালতলা পশুহাটপাড়ার মিনাজের বাড়িতে নেয়া হয়। সজিব ও আরিফসহ এক নারী শুরু করে নির্যাতন। নির্যাতনের শিকার যুবকের পরিচয় প্রথমে জানা যায়নি। পরে শোনা গেছে ওর বাড়ি আলমডাঙ্গার পল্লি জাহাপুরে। সত্যতা নিশ্চিত করা না গেলেও ওই যুবকের ওপর যেভাবে নির্যাতন করে মোবাইলফোনে টাকা দাবি করা হয়েছে তা রোমহর্ষক। যুবককে আটকে মারধর করা হচ্ছে খবর এলাকায় চাওর হলেও কেউ পুলিশে খবর দেয়ার সাহস পায়নি। স্থানীয়দের অনেকেরই ধারণা, ওই চক্রের সাথে পুলিশের কারো কারো সাথে যোগাযোগ রয়েছে। নালিশ করেও কাজ হবে না। উল্টো তথ্যদাতাকে হয়রানির শিকার হতে হবে আশঙ্কায় তেমন কেউই সাহস করেনি। তবে স্থানীয় সচেতন যুবকদের কয়েকজন বিষয়টি এলাকার অভিভাবকদের জানিয়ে করণীয় জানতে চান। সংগঠিত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে ভেবে নির্যাতনকারীরা বিকেল ৫টার দিকে একটি অটোতে ওই যুবককে তুলে দেয়। অবাক হলেও সত্য যে, যুবককে অটোতে তুলে দিলেও স্থানীয়দের তেমন কেউ তার সাথে কথা বলার সুযোগ বা সাহস পায়নি। কারণ, অটোর পেছনে ছিলো চুয়াডাঙ্গা শহরের ৫-৬ জন যুবক। যারা ওই নির্যাতনকারীদেরই সহযোগী।
অটোতে তুলে তাকে বাড়ি ফেরানো হয়েছে? নাকি স্থান পরিবর্তন করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা চলছে? এসব প্রশ্নের জবাব যেমন পাওয়া যায়নি, তেমনই যুবকে কোথা থেকে কীভাবে ওই বাড়িতে নেয়া হয় তাও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেননি। স্থানীয়দের একজন বলেছেন, ওই চক্রের এক নারী সদস্য মোবাইলফোনে ডেকে নিয়ে আপত্তিকর অভিযোগ তুলে মোটা অংকের টাকা আদায় করা হয়। বহিরাগত যুবক কি ওই নারীর সেলফোন টপে এসে বিপাকে? সজিব, আরিফসহ তাদের কয়েকজনের সাথে যোগাযোগের জন্য রাতে নানামুখি চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। তবে আরিফের ফুফু বলে পরিচয়ে দেয়া ফাহী খাতুন বলেছেন, ওই যুবক হাজরাহাটি মাঠে এক মেয়েকে নিয়ে গল্প করছিলো। মেয়েটা পালিয়ে যায়। যুবককে ধরে এনে মিনাজের বাড়িতে রাখে। পরে ছেড়ে দিয়েছে।
কোনো যুবক কোনো যুবতীর সাথে কোথাও বসে কথা বললেই তাদের ধরে এনে বাড়ি বন্দি করা কি আইনসম্মত? পুলিশকে না জানিয়ে একজনকে বাড়ি আটকে নির্যাতন করে টাকা আদায়ের চেষ্টা কি অপরাধ নয়? এ প্রশ্নের কোনো জবাব ফাহী খাতুন দেননি। নির্যাতনের শিকার যুবকের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছে তাও জানা সম্ভব হয়নি।