মাথাভাঙ্গা মনিটর: নিতান্ত এক গরিব ঘরে বেড়ে উঠা মুহাম্মদ সিরাজের। তার বাবা যেখানে সংসারের খরচ যোগাতে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে অটো নিয়ে বের হতেন সেখানে প্রায়শই ওই সময় চার-ছক্কা হাঁকানোর স্বপ্নে মাঠে ছুটতেন তিনি। চার-ছক্কা পেটানোর ওই তাড়না আইপিএল পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়ে এসেছে মুহাম্মদ সিরাজকে। হায়দ্রাবাদের এই পেসারকে ২ দশমিক ৬ কোটি রুপি দিয়ে কিনে নিয়েছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুরন্ত পারফরম্যান্সের কারণে সিরাজের জন্য আইপিএল’র দরজা খুলেছে। এখনো মাঠে নামেননি। তবে বিশ্বাস আছে মাঠে নামলেই ভালো করবেন। আর এই বিশ্বাসে ভর করে বাবা-মায়ের জন্য হায়দ্রাবাদ শহরে একটা ভালো বাড়ি কেনার স্বপ্ন দেখাও শুরু করে দিয়েছেন তিনি।
আইপিএল-এ সুযোগ পেয়ে খানিকটা আবেগপ্রবণ হয়ে সিরাজ জানালেন, ক্রিকেট খেলে প্রথমবার রোজগারের কথা আজ খুব মনে পড়ছে। ওটা একটা ক্লাবের ম্যাচ ছিলো। আর আমার মামা দলের অধিনায়ক ছিলেন। ওই ম্যাচে ২০ রান দিয়ে আমি নয়টা উইকেট তুলে নিয়েছিলাম। মামা খুশি হয়ে আমাকে ৫০০ রুপি উপহার দিয়েছিলেন। এটা আমার কাছে অনির্বচনীয় মুহূর্ত ছিলো। আজ যখন আমার দর ২ দশমিক ৬ কোটি রুপি উঠেছে, তখন কার্যত কিছু বলার মতো অবস্থায় আমি নেই। একেবারে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন সিরাজ। তবে আজও তিনি বাবা-মায়ের ঋণ মাথায় রেখেছেন।
বললেন, আমার বাবা প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। এতো বছর ধরে তিনি অটো চালিয়ে সংসার চালিয়েছেন। কোনোদিন আর্থিক চাপ আমার কিংবা বড় ভাইয়ের ওপর আসতে দেননি। বল করার জন্য যে বুট লাগে, তার অনেক দাম। কিন্তু, তিনি হাসিমুখে আমার জন্য এনে দিয়েছেন। এবার আমি ওদের জন্য একটা ভালো বাড়ি কিনতে চাই। আর হ্যাঁ, দৃঢ় স্বরে এই কথাও দিয়েছেন সিরাজ, এখন থেকে আমার বাবাকে আর অটোরিক্সা চালাতে দেবো না। বিগত বছরগুলোতে অনেকবার আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে যুদ্ধ করতে দেখেছি বাবাকে। এবার তাকে সুখ-স্বস্তির একটা জীবন উপভোগের সুযোগ দিতে চাই।