কেরুজ চিনিকলের ২০১৬-১৭ আখ মাড়াই মরসুম শেষ হচ্ছে আজ

 

আখ মাড়াইয়ের লক্ষমাত্রা পূরণ হলেও অর্জিত হয়নি চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা

দর্শনা অফিস: লোকসান কমিয়ে লাভের আশায় আখ মাড়াই শুরু করা হলেও শেষ পর্যন্ত আশা পূর্ণ হচ্ছে না মিল কর্তৃপক্ষের। এবারও মোটা অঙ্কের লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে চলতি আখ মাড়াই মরসুমের ইতি টানতে হচ্ছে। আখ মাড়াইয়ের লক্ষমাত্রা পূরণ হলেও চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্র অর্জনের ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে থাকতে হচ্ছে। আখেরী হুইসেল বাজিয়ে আজ শনিবার সকালে মিলের ২০১৬-১৭ আখ মাড়াই কার্যক্রমের ইতি টানা হতে পারে। গত বছরের ২৮ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে কেরুজ চিনিকলের ২০১৬-১৭ আখ মাড়াই মরসুমের উদ্বোধন করেন চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান একেএম দেলোয়ার হোসেন। করপোরেশন থেকে এ মরসুমে কেরুজ চিনিকলের নির্ধারিত লক্ষামাত্রা বেঁধে দেয়া হলোছিলো ৯০ আখ মাড়াই দিবসে ৮০ হাজার মেট্রিকটন আখ মাড়াই করা। ৮০ হাজার মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করতে হবে ৬ হাজার মেট্রিক টন। চিনি আহরণের গড় হার নির্ধারিত ছিলো ৭ দশমিক শূন্য শতাংশ। কেরুজ চিনিকলের নিজস্ব ২ হাজার ৭৫ একর ও সর্বমোট ৭ হাজার ৬২০ একর জমিতে আখ রোপণ করা হয়েছিলো। সে হিসেব মতে চলতি মাড়াই মরসুমে প্রায় ৯০ হাজার মেট্রিকটন আখ মাড়াইয়ের সম্ভবনা ছিলো চিনিকল কর্তৃপক্ষের। গতকাল শুক্রবার ৭৩ মাড়াই দিবস পর্যন্ত আখ মাড়াই হয়েছে ৭৭ হাজার ৩শ ৯০ মেট্রিকটন। আজ শনিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত আরও ৯শ মেট্রিকটন আখ মাড়াই হবে বলে জানিয়েছেন মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম আরশাদ হোসেন। ফলে এবারের মাড়াই মরসুমে ৭৮ হাজার ২শ মেট্রিকটন আখ মাড়াই হবে। গতকাল পর্যন্ত চিনি উৎপাদন হয়েছে ৪ হাজার ১৬৬ মেট্রিকটন। আরও ১৫০ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন হবে। সর্বমোট চিনি উৎপাদন হবে প্রায় ৪ হাজার ২শ ১৬ মেট্রিক টন। যা লক্ষমাত্রার ২ তৃতীয়াংশ।

চিনি আহরণের হার কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম আরশাদ হোসেন জানান, মিলের নিজস্ব জমির আখ মাড়াইয়ের ক্ষেত্রে চিনি আহরণের হার ছিলো ভালো। কৃষকরা ভুট্টার মধ্যে আখ চাষ করার কারণে চিনি আহরণের হার কমেছে। যে কারণে নির্ধারিত লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়নি।

এদিকে আখচাষিরা বলেছেন, কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ সাশ্রয়নীতির কারণে আখ কর্তনের শ্রমিক মজুরি কমানোর জন্যই শ’ শ’ একর জমির আখে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়েছে। এ কারণেই চিনি আহরণের হার কমতে পারে।

এ ব্যাপারে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন, আখ পুড়ালে চিনি আহরণের হার কমে না। তবে আখ পুড়ানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই আখ মাড়াই করতে হবে। সেক্ষেত্রে কৃষকরা পাল্টা মন্তব্য করে বলেছে, কেরুজ চিনিকলে প্রতিদিন হয়তো সর্বচ্চ ১ হাজার মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে থাকে। অথচ প্রতিদিন শ’ শ’ একর জমির আখ পুড়িয়ে নির্ধারিত সময় মাড়াই করতে পারেনি। যে কারণে চিনি আহরণের হার কমেছে। একটি অসমর্থিত সূত্র থেকে জানা গেছে, এ মরসুমে মিলের চিনি কারখানায় লোকসানের পরিমাণ হতে পারে কমপক্ষে ১৭-১৮ কোটি টাকা।।

 

Leave a comment