স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ বেতারের জন্য চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি হিসেবে ৫ জনকে মনোনয়ন করে তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ তালিকা প্রণয়ন করেছেন বলে জানা গেছে। তালিকায় স্থান পাওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে অসাংবাদিকও রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না প্রেসক্লাবের অন্য নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ সদস্যরা। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সদস্যদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ বেতারের চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি প্রবীণ সাংবাদিক অ্যাড. কামরুল আরেফীন গত বছরের নভেম্বর মাসে নিজ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। বয়সের কারণে তিনি তার নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে করতে পারছিলেন না বলে নিজেই বাংলাদেশ বেতার থেকে অব্যাহতি নেন। এই অব্যাহতির পর চুয়াডাঙ্গা জেলায় বিভিন্ন সরকারি কর্মকা- এবং দৈনন্দিন ঘটনাবলির খবর বেতারে প্রেরণের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫ জনের নামের তালিকা চেয়ে বাংলাদেশ বেতারের উপমহাপরিচালক (বার্তা) চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠান। গত ২০ নভেম্বর ওই চিঠিটি জেলা প্রশাসকের কাছে এসে পৌঁছায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চিঠিটি হাতে পাওয়ার পর জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি আজাদ মালিথাকে বেতারে কাজ করতে ইচ্ছুক সাংবাদিকদের তালিকা জমা দিতে বলেন। এর তিন দিনের মাথায় প্রেসক্লাব সভাপতি অনেকটা গোপনে ৫ জনের তালিকা চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেন। সেই তালিকায় রয়েছেন- চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আকাশ খবরের সম্পাদক প্রকাশক অ্যাড. তছিরুল আলম ডিউক, চ্যানেল আই ও জনকণ্ঠের প্রতিনিধি রাজিব হাসান কচি, এটিএন বাংলার প্রতিনিধি রফিক রহমান, দৈনিক নয়াদিগন্তের প্রতিনিধি আশরাফুল হক ওরফে বিপুল আশরাফ ও সাংবাদিক আলমগীর কবির। বুধবার বিকালে ঘটনাটি চুয়াডাঙ্গার কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে জানাজানি হলে তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেকে এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বিষয়টি সকলের জানিয়ে তালিকা তৈরি করা দরকার ছিলো। কিন্তু এটা করা হয়নি। বিষয়টি দুঃখজনক। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাছাড়া তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে অ্যাড. তছিরুল আলম ডিউক বাদে একজন অসাংবাদিক, একজন স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের মুখপাত্র দৈনিক নয়াদিগন্তে কাজ করে। অন্য দুইজন ঘরে বসে সাংবাদিকতা করে। তাছাড়া তারা প্রযুক্তি সর্ম্পকে কিছুই জানেন না। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি অ্যাড. রফিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। প্রবীণ সাংবাদিক ডা. শাহার আলীর মতে সকলকে জানিয়ে তালিকা জমা দেয়া দরকার ছিলো। তাহলে এই বির্তক তৈরি হতো না।
সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা ইউনিটের একাংশের সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম শেলী জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় দুটি প্রেসক্লাব এটা জেলা প্রশাসক অবগত আছেন। জেলা প্রশাসকের উচিত ছিলো দুটি প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ আলোচনা করে বেতারে কাজ করতে ইচ্ছুক এমন সদস্যদের কাছ থেকে আবেদন চাওয়া।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস জানান, চিঠিটি হাতে পাওয়ার পর আমি প্রেসক্লাব সভাপতির সাথে আলাপ করে তালিকা চাই। তিনিই ৫ জনের নাম মনোনীত করে তালিকাটি জমা দেন। এটা গোপনে করা হয়েছে কি-না আমার জানা নেই।