স্টাফ রিপোর্টার: অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনসহ ১২ দফা দাবিতে দক্ষিণ-পশ্চিমের ২১ জেলায় চলছে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদের ডাকা এ ধর্মঘট গতকাল সোমবার ভোরে শুরু হয়। ঐক্যপরিষদের আহ্বায়ক আবদুল গফ্ফার বিশ্বাস বলেন, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের সাইড অ্যাঙ্গেল, বাম্পার ও হুক অপসারণের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ১২ দফা দাবি আদায়ের জন্য এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। চলবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত। খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদ, কুষ্টিয়া, বৃহত্তর ফরিদপুর ও বরিশাল বিভাগসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সব পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছেন বলে তিনি জানান। গত শনিবার খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা থেকে মালবাহি ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান, জ্বালানি ট্যাংক লরি ছেড়ে যায়নি । খুলনা বিভাগীয় ট্যাংক লরি মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ও চুয়াডাঙ্গা শাখার সাধারণ সম্পাদক তসলিম আরিফ জানিয়েছেন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ খুলনা বিভাগীয় শাখার ডাকে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি ২১ জেলায় চলবে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, চাঁদাবাজি বন্ধ, অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধসহ ১২ দফা দাবিতে মালিক-শ্রমিক ঐ্যপরিষদের ডাকে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাতে চলছে পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট। গতকাল সোমবার সকাল থেকে কোনো ট্রাক ও লরি মেহেরপুর থেকে ছেড়ে যায়নি। পণ্য পরিবহণ বন্ধ থাকায় সব চাইতে বেশি বিপাকে জেলার কৃষকেরা। কারণ শীত মরসুমে এ জেলা বিভিন্ন বিভিন্ন প্রকার সবজি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
মেহেরপুর ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রানা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে। অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- ১২ দফা দাবিগুলো হচ্ছে মালিক-শ্রমিক ঐ্যপরিষদেও দাবিগুলো হলো, বি.আর.টি.এ কতৃক জারিকৃত ৫২২৯ নং স্মারকের ২৮/১২/২০১৬ তারিখের পত্রের ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের সাইড এঙ্গেল, বাম্পার ও হুক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। সকল সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বন্দও সমূহের কতৃপক্ষের ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের ব্লু-বুক এ নির্ধারিত ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্য বোঝায় না করার জন্য সরকার কতৃক নির্দেশ জারি করতে হবে। প্রতিটি জেলায় জেলায় সরকারি প্রতিনিধি ও মালিক-শ্রমিক সমন্বয়ে গঠিত অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দিতে হবে। সরকারি ওয়েব্রীজ জরিমানা বাতিল করে পূর্বের দেয়া এক হাজার ২০০ টাকা স্কেল জরিমানা প্রত্যাহার করতে হবে। সকল ফেরীঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া সড়ক-মহাসড়কে কোনো ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও ট্রাংকলরীসহ পণ্যবাহী যানের কাগজপত্র পরীক্ষার নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এছড়াও মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করতে হবে। সমগ্র বাংলাদেশে পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের নামে চাঁদাবাজি চলছে তা অবিলম্বে বন্ধ তকরতে হবে। সকল পণ্য পরিবহন যানের ব্রিজের টোল কমাতে হবে। অপরিকল্পিত ও অপেওয়াজনীয় স্পিড ব্রেকার অপসারণ করতে হবে। জেলায় জেলায় সরকার কতৃক ড্রাইভারদেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ দ্রুত ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। ট্রাক, ট্রাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যানের বডির ধরণ পরিবর্তন করতে পুনঃপূণাঙ্গ রেজিস্ট্রেশন ফি গ্রহণ প্রথা বাতিল করতে হবে। এছাড়াও অবিলম্বে জ্বালানি তেলের দাম কমাতে হবে। যানবাহনের বাম্পার-হুক-এঙ্গেলের অযুহাতে বি.আর.টি.এ ফিটনেস নবায়ন করে নাই সেগুলো জরিমানা বাদে নবায়ন করার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশি পণ্য পরিবহন চালকদের ভারতের পেট্রোলপোলে নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও সীতাকুণ্ডু থানায় অজ্ঞাত ট্রাক চালকের নামে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।