চালক ও হেলপারকে ঢাকার আদালতে সোপর্দ ॥ কিশোরীর বাসা ঢাকার কেরানীগঞ্জে ॥ পিতার হেফাজতে ফিরেছে বাড়ি
স্টাফ রিপোর্টার: রয়েল পরিবহনের একটি কোচের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে নারীযাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে যৌন নিপীড়ন আইনে মামলা হয়েছে। ঢাকার গাবতলী তথা দারুস সালাম থানায় গতপরশু মামলা রুজু হয়। মামলায় গ্রেফতারকৃত দুজন আসামি চালক ও হেলপারকে গতকাল আদালতে সোপর্দ করা হয়। এদিকে মূল আসামি সুপারভাইজার মিল্টন (৩৬) গতকাল রোববার আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়ে এখন অনিশ্চয়তার প্রহর গুনছে। গতরাতে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর সেই কিশোরী যাত্রী? তার বাড়ি ঢাকার কেরানীগঞ্জে। গতকাল তার পিতার হেফাজতে তাকে দেয়া হয়েছে। তার পিতাও বলেছে, মেয়ের মাথায় সমস্যা আছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা রেলপাড়ায় গত শুক্রবার দুপুরে আনুমানিক ১৭ বছর বয়সীয় এক কিশোরীকে ঘুরতে দেখা যায়। ওই কিশোরী ট্রেনের পিছু পিছু ছুটতে দেখে কয়েক যুবক তাকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। কিশোরী জানায়, তার বাড়ি ঢাকার গাবতলী। রেলপাড়ার এক নারী এসে যুবকদের সামনে দাঁড়ান। তিনি কিশোরীকে নিজ হেফাজতে নেন। যুবকদের বলেন, তোমাদের ওতো দরদ থাকলে নিজেরা টাকা তোলো। টাকা তুলে ওই কিশোরীর ঢাকায় যাওয়ার টিকেট কাটার দাম জোগাড় করে দাও। স্থানীয় একদল যুবক চাঁদা তুলে কিছু টাকা জোগাড় করে। রাত ৮টার রয়েল এক্সপ্রেসে তুলে দেয়। ঢাকায় রওনা হয় রয়েল পরিবহনের কোচ। যাত্রীদের কয়েকজন অভিযোগ তোলেন ওই কিশোরীকে ঘুমন্ত অবস্থায় শ্লীলতাহানি করছে কোচের সুপারভাইজার চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা ইব্রাহিমপুরের মিল্টন। তাকে ধরে কোচের যাত্রীরা গণপিটুনি শুরু করেন। একপর্যায়ে নবীননগরের নিকট সে কৌশলে নেমে পড়ে। রয়েল পরিবহনের কোচটি ঢাকা গাবতলী পৌঁছুলে যাত্রীদের তরফে পুলিশে বিস্তারিত জানানো হয়। পুলিশ কোচসহ কোচের চালক ও হেলপারকে গাবতলীর দারুস সালাম থানায় নেয়। গতপরশু চালক ও হেলপারকে গ্রেফতার দেখালেও সুপারভাইজারকে পলাতক দেখিয়ে মামলা রুজু হয়। গতকাল রোববার এ মামলায় চালক ও হেলপারকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। অপরদিকে কিশোরীর পিতা খবর পেয়ে থানায় হাজির হন। তিনি কেরানিগঞ্জের বাসিন্দা। কন্যাকে নিজ হেফাজতে গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি বলেন, মেয়ের মাথায় সমস্যা আছে। কয়েকদিন আগে সে নিজের বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়।
যাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে দায়েরকৃত যৌন নিপীড়ন আইন মামলার প্রধান আসামি মিল্টন পুলিশের দৃষ্টিতে পলাতক। দু সন্তানের জনক সে। গতকাল সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার মাঝহাদে ছোটবোনের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়। মুখে বিষের গন্ধ। ফলে দ্রুত তাকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মিল্টন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো। সে গুনছিলো অনিশ্চয়তার প্রহর। মিল্টন দামুড়হুদা উপজেলার ইব্রাহিমপুরের মৃত বদর উদ্দীনের ছেলে।