স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষিত প্রাথমিক ও নিম্ন-মাধ্যমিক স্তরের নোট ও গাইড অবাধে বিক্রি হচ্ছে। বছরের শুরুতে এসব বই কিনতে দোকানগুলোতে ভিড় করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। প্রকাশ্যেই হচ্ছে এসব অবৈধ বই বিক্রি। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের উপঢৌকন দিয়ে নিম্নমানের গাইড ও গ্রামার বই বিক্রিরও হিড়িক পড়েছে চুয়াডাঙ্গায়।
সরকার শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের জন্য যুক্ত করেছে সৃজনশীল পদ্ধতি। একই সাথে সরকার ও দেশের সর্বোচ্চ আদালত অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নোট ও গাইড বই বিপণন, প্রদর্শন, প্রস্তুতকরণ, মুদ্রণ ও প্রকাশনা নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও উপজেলায় এক শ্রেণির লাইব্রেরি মালিকরা ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত নোট ও গাইড বইয়ের মজুদ গড়ে তুলেছেন। প্রকাশ্যেই বিক্রি করছেন চড়াদামে। এছাড়া লাইব্রেরি মালিক ও প্রকাশনীর প্রতিনিধিরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারের প্রধান শিক্ষক, পরিচালক ও শ্রেণি শিক্ষকদের লোভনীয় কমিশন ও ডোনেশন দিয়ে ম্যানেজ করেছে। কোচিং ও স্কুল শিক্ষকদের চাপে পড়ে দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির কোমলমতি শিক্ষার্থীরা চড়াদাম দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত গাইড ও নোটবই কিনতে বাধ্য হচ্ছে। এসব তত্ত্বাবধানে রয়েছেন সমিতির নেতারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অষ্টম শ্রেণির একটি গাইড বই বিক্রি হচ্ছে ৮১০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকায়। চতুর্থ শ্রেণির একটি গাইড বইয়ের মূল্য কমপক্ষে ৪৫০ টাকা। অভিভাবকদের অনেকেরই অভিযোগ, সরকার বিনামূল্যে বই দিলেও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া আমার মেয়ের জন্য স্কুল শিক্ষকদের চাপে ৬১০ টাকায় একটি গাইড বই কিনেছি। কোচিং সেন্টারের শিক্ষকদের চাহিদা অনুযায়ী অন্য প্রকাশনীর আরও একটি গাইড বই কিনতে হবে। অপর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বইয়ের দোকানদার ও কোচিং সেন্টার এবং স্কুলের শিক্ষকদের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকাশনীর বুকলিস্ট ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা লিস্টে উল্লেখিত প্রকাশনীর নোট ও গাইড বই নিদিষ্ট লাইব্রেরি থেকে চড়াদামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
এদিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত নোট ও গাইড বই বিক্রি বন্ধে মোবাইলকোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা থাকলেও এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।