চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা-কার্পাসডাঙ্গা সড়কের মোক্তারপুরে দুর্ঘটনা ॥ নেপথ্যে দায়ী মোবাইলফোন
কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি/ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা: ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য কাঠবহন করা ট্রাক্টরের ধাক্কায় খোয়াভাঙা মেশিনযুক্ত গাড়িচালক রিপন বিশ্বাস (২৮) নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে দামুড়হুদা-কার্পাসডাঙ্গা সড়কের মোক্তারপুর রেড ইটভাটার অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ইটভাটার কাঠবহন করা ট্রাক্টরচালক মোবাইলফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালানোর কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য প্রত্যক্ষদর্শীদের।
নিহত রিপন বিশ্বাস কার্পাসডাঙ্গা আদিবাসীপাড়ার স্বর্গীয় গৌরাঙ্গ বিশ্বাসের ছেলে। দুর্ঘটনায় রিপন বিশ্বাস নিহত হওয়ার পর তার নিকটজনদের নিয়ে স্থানীয়রা রেড ব্রিকসের মালিকের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। সূত্র বলেছে, ৬০ হাজার টাকা রিপন বিশ্বাসের পরিবারের হাতে তুলে দেয়ায় শেষ পর্যন্ত মামলা হয়নি। ফলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই গতরাতে কার্পাসডাঙ্গার কাটাখালী শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
পরিবারের সদস্যরা বলেছে, প্রতিদিন ভোরে কাজ করার জন্য বাড়ি থেকে বের হতো রিপন বিশ্বাস। গতকালও কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। নিজ মহল্লার রাম প্রসাদ বিশ্বাসসহ কোমরপুরের কয়েকজনকে সাথে নিয়ে খোয়াভাঙা মেশিনযুক্ত তিনচাকার গাড়ি নিয়ে রাজা ইটভার উদ্দেশে রওনা হয়। মোক্তারপুর রেড ইটভাটার নিকট পৌঁছুলে ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য কাঠবহন করা ট্রাক্টর ওই খোয়াভাঙার গাড়ির ধাক্কা মারে। আছড়ে পড়ে চালক রিপন বিশ্বাস গুরুতর জখম হয়। আহত হয় তার সাথে থাকা রাম প্রসাদ, কোমরপুরের সাইফুলসহ কয়েকজন। দ্রুত এদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার কিছুক্ষণের মধ্যেই রিপন বিশ্বাস মারা যান।
স্থানীয়রা বলেছে, দু সন্তানের বাবা রিপন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে রাস্তার পাশে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পড়ে ছিলো। এ সময় ট্রাক্টর চালক নাপিতখালীর মানিক গাড়ি ফেলে পালিয়ে যায়। আহত সাঈদ জানান, ট্রাক্টরচালক মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ হওয়ার পর আমরা বলতে গেলে চালক মানিক গাছের ডাল দিয়ে আমাদেরকে মারতে শুরু করেন। এদিকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ভাটামালিক ফজলুল হক। ভাটামালিক মৃত রিপনের পরিবারকে আপস মীমাংসার জন্য অনুরোধ জানান। রিপনের পরিবার ও ভাটা মালিক কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে আপস-মীমাংসার জন্য বসেন। কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্টুর উপস্থিতিতে ৬০ হাজার টাকায় আপস-মীমাংসা হয় বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলে, ইটভাটাগুলোর নিয়ন্ত্রিত ট্রাক্টর গাড়িগুলো বেপরোয়াভাবে চালায় এবং কোনো ট্রেনিং ছাড়ায় অধিকাংশ চালক মাটি কাটতে কাটতে চালক সেজে বসেছে। চালকরা যাতে ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন গাড়ি না চালাতে পারেন সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছে এলাকাবাসী। গতকাল রাত ১০টার দিকে রিপনের লাশ কাটাখালী শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।