জীবননগর গঙ্গদাসপুরে বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে আবারো ঝরলো রক্ত : দু’পক্ষের দুজন জখম

 

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগরের গঙ্গাদাসপুর গ্রামে ১১৬ বিঘা বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে আবারো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার সকালে জামলাগাড়ি বোরিং মাঠে জমিতে চাষ করাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষে ভূমিহীন জোতদার গ্রুপের বিপ্লবকে (২০) ও গোলদার গ্রুপের জামাত আলীকে (৫০) কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত বিপ্লবকে চুয়াডাঙ্গা ও জামাত আলীকে যশোর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। বিপ্লব গঙ্গাদাসপুর গ্রামের মৃত সাহাবুদ্দীনের ছেলে। সাহাবুদ্দিনকে গত ৪ জানুয়ারি প্রতিপক্ষ গ্রুপ কুপিয়ে হত্যা করেছিলো। অপরদিকে জামাত আলী মৃত সদর উদ্দীন মণ্ডলের ছেলে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ রাতেই জীবননগর থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেছে। হামলার ঘটনা নিয়ে উভয়পক্ষ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলার গঙ্গাদাসপুর গ্রামের মৃত সদর উদ্দীনের ছেলে জামাত আলী (৫০) তাদের জামলাগাড়ি বোরিং মাঠে কলাইয়ের ক্ষেতে কাজ করতে  যায়। এ সময় প্রতিপক্ষ  ভূমিহীন গ্রুপের সাহাবুদ্দীনের ছেলে বিপ্লব ও সহযোগীরা মাঠের পাশেই পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকে। জামাত আলী তার সাথে থাকা জন মজুরদের নিয়ে ক্ষেতে কাজ করার সময় প্রতিপক্ষ গ্রুপের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাঁধলে গোলদার গ্রুপের জামাত আলী হেঁসোর কোপে রক্তাক্ত ও ভূমিহীন গ্রুপের বিপ্লব সংঘর্ষে রক্তাক্ত জখম হয়। পরে এলাকাবাসী তাদেরকে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনেরই অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে তাদেরকে রেফার করেন। এ ঘটনায় রাতেই ভূমিহীন পরিবারের পক্ষ থেকে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৪-৫ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করে। অপরদিকে গোলদার গ্রুপের পক্ষ থেকে ১৭ জনের নামে অপর মামলা দায়ের করা হয়। এ দিকে রক্ষক্ষয়ী এ সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের পক্ষ থেকে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে।

ভূমিহীন গ্রুপের ইকবাল হোসেন অভিযোগে জানান, গতকাল সকাল ১০টায় জামলাগাড়ি মাঠে জনৈক আমির আলির জমিতে বিপ্লবকে একা পেয়ে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাকে জিম্মি করা হয়। এ সময় বিপ্লব প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গঙ্গাদাসপুর গ্রামের মৃত সদর উদ্দীনের ছেলে জামাত আলী (৫০), আবুল কালাম (৪৫), জামাত আলীর ছেলে বাসার (২৮) ও আব্দুর রহিম (২৫), আবুল কালামের ছেলে ওহিদ (২০) ও সোহেল (২২), মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে বাক্কা (৪৫), মুনছুর গোলদারের ছেলে ইলিয়াস (২৫), রবিউল ইসলাম গোলদারের ছেলে নজরুল ইসলাম গোলদার, সামসুল ওরফে ভুনার ছেলে মিলন (২৩) , আফসার আলীর ছেলে বিশু গোলদার(৩৮) ও হাসান গোলদার (২৫) মৃত আজাম হোসেনের ছেলে সিদ্দিক (৪০), আনছার আলীর ছেলে মজু (৩৪) ও মৃত হারান মণ্ডলের ছেলে আশরাফ আলী (৪৫)সহ অজ্ঞাত আরো বেশ কয়েজন বিপ্লবকে ধারালো হাসুয়া দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে।

অপরদিকে গোলদার গ্রুপের বাসার উদ্দীন অভিযোগে জানান, গঙ্গাদাসপুর গ্রামের বোরিং মাঠে তার পিতা জামাত আলী (৫০) মুগ ক্ষেত দেখতে গেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পূর্বশত্রুতার জের ধরে একই গ্রামের রায়হায়ের ছেলে রাজন (৩২), মৃত মোস্তবারীর ছেলে রিপন (৩২) ও হানেফ (৫০), মৃত আলী হোসেনের ছেলে সাহাবুল (৪০), আমিন উদ্দীনের ছেলে ছোটন (৩০), মৃত সাহাবুদ্দীনের ছেলে বিপ্লব (২৭) ও চঞ্চল (৩৫), বাদলার ছেলে আরিফুল (৩২), মৃত ছদ্দিনের ছেলে বাদলা (৫৫), মৃত ইউনুছ আলীর ছেলে মৃত রমজান (৪৫), রমজান আলীর ছেলে আ.সামাদ (২৬), জয়নালের ছেলে শামিম (৩২), মৃত ফরজ আলীর ছেলের  আমির হোসেন (৪০) আমির হোসেনের ছেলে আব্দুর রশিদ (৩৫), ছমির উদ্দীনের ছেলে নাঈম (২৬), আলতাফ হোসেনের ছেলে ফারুক (২৬), আ. রাজ্জাকের ছেলে রাজিব (২৫), সংঘবদ্ধভাবে জামাত আলীর ওপরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপ দেয়। জামাত আলীর হাত ও ঘাড়ের নিচে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

 

Leave a comment