চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী মার্কের্টের একটি কম্পিউটারের দোকানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযান : কেঁচো খুঁড়তে সাপ
স্টাফ রিপোর্টার: পরীক্ষার সার্টিফিকেট, মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র, ভূমি অফিসের ডিসিআর ফরম, কী নেই এখানে? টাকা দিলেই নিমেষে পেয়ে যাবেন সার্টিফিকেট। পরীক্ষায় পাস করেননি তাতে কী হয়েছে? টাকা দিলেই পেয়ে যাবেন পাসের সার্টিফিকেট। তবে আসল নয় নকল বা জাল। এ ধরনের অসংখ্য জাল কাগজপত্রসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জাল করার কারখানা আবিষ্কার করেছেন চুয়াডাঙ্গার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসফিকুল আলম হালিম। চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির মার্কেটের ফারুক কম্পিউটার্স দোকানে তল্লাশি চালিয়ে কেঁচো খুঁড়তে সাপের সন্ধান পান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে মুসফিকুল আলম হালিম। অসংখ্য জাল কাগজপত্রসহ দোকানের মালিক ফারুক হোসেনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়। তার বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলার আদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
জানা গেছে, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মাইলবাড়িয়া গ্রামের শামসুল আলমের ছেলে ফারুক হোসেন চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরস্থ আরামপাড়ার শ্বশুরালয়ে বসবাস করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতি মার্কেটে তিনি কম্পিউটারের দোকান দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসফিকুল আলম গতরাত পৌনে ৮টার দিকে পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালান। এ সময় তা দোকান থেকে সমস্ত পাবলিক পরীক্ষার জাল সার্টিফিকেট, মুক্তিযোদ্ধার জাল সনদপত্র, ভূমি অফিসের জাল ডিসিআর ফরম, ট্রেড লাইসেন্সের জাল কাগজপত্র, বিআরটিএ’র জাল রেজিস্ট্রেশনসহ মূল্যবান ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়। জব্দ করা হয় বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার সিলমোহর। এ সময় কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, সিপিইউ, পিন্টারসহ কম্পিউটারের যাবতীয় তথ্য উপাত্ত জব্দ করা হয়। এ যেন কেঁচো খুঁড়তে সাপের সন্ধান। এ ঘটনা জানাজানির পর সচেতন মহল হতবাক হয়ে পড়ে। একটি সূত্র জানায়, ফারুক হোসেন যেকোনো জাল কাগজপত্র তৈরিতে ছিলেন সিদ্ধহস্ত। টাকা দিলে তিনি মুক্তিযোদ্ধার সনদও দিয়ে দিতেন। তার কাছ থেকে অসংখ্য মানুষ সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরিবাকরিও করছে বলে অনেকেই জানান। দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের ব্যবসা করে আসছেন ফারুক। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসফিকুল আলম হালিম গোপনসূত্রে খবর পেয়ে গতকাল তার দোকানে অভিযান চালান। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে এ সময় সহযোগিতা করেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন। ফারুককে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়। সেই সাথে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসফিকুল আলম হানিফ তার বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা করার জন্য আদেশ দেন। রাত পৌনে ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলা অভিযানের সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বেঞ্চ সহকারী নাজমুল হক।