ওয়ানডের শততম জয় তুলে নিলো বাংলাদেশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: গ্যালারিতে মোবাইলগুলোর আলো জ্বলে উঠলো, মেক্সিকান ওয়েব চললো। পুরোটা ম্যাচ জুড়ে টানা উল্লাসের চিত্কার শোনা গেলো। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারি অবশেষে আবার জেগে উঠলো। কারণ জাতীয় দল আবার স্বরূপে ফিরে এসেছে। হ্যাঁ, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রবল প্রতাপ দেখানো বাংলাদেশ দল অবশেষে আবার নিজেদের চেনা চেহারায় ফিরে এলো দুই ম্যাচ বিরতি দিয়ে। আর সেই প্রবল প্রতাপের ম্যাচে দাপটের সাথে ১৪১ রানে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজও নিজেদের হাতে পুরে নিলো বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশের শততম ওয়ান ডে জয়। আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান রুম্মনের দারুন ব্যাটিংয়ে ২৭৯ রান করেছিলো ৮ উইকেট হারিয়ে। জবাবে ক্যামব্যাক হিরো মোশাররফ রুবেল ও তাসকিন আহমেদের বোলিংয়ে আফগানিস্তানকে ৩৩.৫ ওভারে ১৩৮ রানে অলআউট করে দিলো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশকে শুরু থেকে খেলায় রেখেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজারা। ইনজুরিতে পড়ে অল্প সময়ের জন্য মাঠ ছাড়ার আগে দলকে প্রথম উল্লাসের উপলক্ষ এনে দেন মাশরাফি; ফেরান তিনি মোহাম্মদ শাহাজাদকে। এরপর নওরোজ মঙ্গল ও রহমত শাহ ৫২ রানের জুটি করে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। নওরোজকে আউট করে জুটি ভাঙেন সাড়ে আট বছর পর আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে ফেরা মোশাররফ রুবেল। একই ওভারে তিনি তুলে নেন হাশমত উল্লাহর উইকেট। এরপর এসে রুবেল নিজের বলেই ধরেন মোহাম্মদ নবীর ক্যাচ। আর মাঝে তাসকিন শেনওয়ারি ও রহমত শাহর উইকেট। শেষ দিকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত বল হাতে নিয়েই আবার উইকেট নিলেন। এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। সকাল থেকে টানা রোদ থাকায় উইকেট প্রথম ম্যাচের চেয়ে ভিন্ন আচরণ করে। আগের দু ম্যাচে যেমন ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন ছিলো, তেমন ছিলো না উইকেটের আচরণ। তারপরও ওপেনার সৌম্য সরকার তার ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।

সৌম্য ১১ বলে ১১ রান করে আউট হওয়ার পরই দিনের সেরা জুটিটা উপহার দেন তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান রুম্মন। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুজন যোগ করেন ১৪০ রান। ৩১তম ওভারে গিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া এই জুটি ভাঙে। ৭৯ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো ৬৫ রান করে আউট হন রুম্মন। গতকাল তিনি প্রমোশন পেয়ে প্রথমবারের মতো তিন নম্বরে ব্যাটিং করেন ওয়ানডে ক্রিকেটে। সৌম্য আউট হয়ে যাওয়ার পরও অবশ্য তামিম ইকবালের ব্যাট চলেছে। তিনি আউট হয়েছেন ৩৯তম ওভারে গিয়ে। তার আগেই ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের সপ্তম সেঞ্চুরিটা তুলে নিয়েছেন তামিম। ৬৩ বলে ফিফটি ও ১১০ বলে সেঞ্চুরিতে পৌছেছেন তামিম। ইঙ্গিত ছিলো যে, ইনিংসটাকে আরও বড় করবেন। কারণ পরের ৮ বলে ১৮ রান করে ফেলেন তামিম। কিন্তু আরেকটি ছক্কা মারতে গিয়ে মোহাম্মদ নবীর শিকার হয়ে ফেরেন তামিম। এই বাহাতি ওপেনারের বিদায়ের পর একটা বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। সাকিব, মুশফিক ও মোসাদ্দেক সৈকত দ্রুত ফিরে আসেন। এরপর এক প্রান্তে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ লড়াই চালিয়ে যান। ১৪টি বল খেলে ৪ রান করা মোশাররফ রুবেল এই সময়ে রানের চাকা ঘোরাতে মোটেও সহায়তা করেননি। ২২ বলে অপরাজিত ৩২ রান তোলা রিয়াদ মাশরাফি ও সফিউলকে নিয়ে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন।

 

Leave a comment