গাংনীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার মটমুড়া গ্রামের গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ শুনানিতে অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী পক্ষের ব্যক্তিরা সাক্ষ্য প্রদান করেন। তৈয়ব আলী মুক্তিযুদ্ধ না করেই মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন বলে দাবি অভিযোগকারীদের। অপরদিকে গ্রাম্য শত্রুতার কারণে তার বিরদ্ধে অভিযোগ বলে দাবি করেছেন তৈয়ব আলী।

অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মটমুড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। গ্রামের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাসহ ২৫ জন সাক্ষীর লিখিত অভিযোগের আবেদনে স্বাক্ষর করেন মটমুড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান। অভিযোগে তৈয়ব আলীকে একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করা হয়। তিনি কখনো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না এবং মুক্তিযুদ্ধের সাথে তার দূরতম কোনো সম্পর্কও ছিলো না বলে দাবি করে গেজেট থেকে নাম বাদ দেয়ার দাবি জানান আবেদনকারীরা।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী মোজাম্মেল হক উভয়পক্ষের বক্তব্য ও মতামত প্রদানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তদন্তের জন্য সমাজসেবা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

গতকালের শুনানিতে উভয়পক্ষের বেশ কিছু ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। গাংনীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুন্তাজ আলী। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সনদে ২০১৩ সালের গেজেটে তৈয়ব আলী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার তার বিষয়ে কিছু জানা নেই বলে মতামত দেন মুন্তাজ আলী। তবে তৈয়ব আলীকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করতে সুপারিশ করেছেন মহিলা এমপি সেলিনা আখতার বানু ও মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক এমপি জয়নাল আবেদীন। সুপারিশসহ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত সনদপত্র শুনানিতে উপস্থাপন করেন তৈয়ব আলী।

মুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলী জানান, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। অন্য মুক্তিযোদ্ধারা সেসব কাগজপত্রের বলে গেজেটভুক্ত হয়েছেন তিনিও একইভাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। কিন্তু পারিবারিক ও গ্রাম্য বিরোধের কারণে কিছু মানুষ তার মানহানি করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তারা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। ভারতের মুক্তি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ও সেখান থেকে সনদপত্র পাওয়ার বিস্তারিত বর্ণনা দেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার তৌফিকুর রহমান জানান, তৈয়ব আলী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির পক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। উভয়পক্ষের কয়েকজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। এসব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে। অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

Leave a comment