মাথাভাঙ্গা অনলাইন: বিশ্বজুড়ে জেঁকে বসেছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। উৎপত্তির মাত্র তিনমাসের মাথায় অর্ধলক্ষ ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। আক্রান্ত ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বখ্যাত ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটির কালো থাবায় বিশ্বের প্রায় ৬ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এতে করে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৩ হাজার ১৯০ জনে। অপরদিকে, গত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রায় ৮০ হাজার মানুষ আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। ফলে, আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ১০ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে। করোনায় প্রাণ হারাদের মধ্যে শুধু ইউরোপেই প্রায় ৩৫ হাজার নাগরিক। যার সবচেয়ে ভুক্তভোগী ইতালি, স্পেন ও যুক্তরাজ্য। ইতালিতে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ছুঁই ছুই। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৭৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯১৫ তে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজার বেড়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৪২ জনে ঠেকেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মানুষ মারা গেছে প্রতিবেশি স্পেনে। প্রতিদিনই সেখানে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হচ্ছে। দেশটিতে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ১০ হাজার ৩৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যেখানে গত একদিনে মারা গেছেন ৯৬১ জন। মোট আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৬৫ জনে। প্রাণহানিতে ইউরোপের এ দুই রাষ্ট্র (ইতালি ও স্পেন) এগিয়ে থাকলেও ভয়াবহ সংকটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। করোনার হানায় দেশটিতে আক্রান্তের জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। এতে সংক্রমিতের সংখ্যা আড়াইল লাখ ছুঁই ছুঁই। গত ২৪ ঘণ্টায় ট্রাম্পের দেশে অন্তত সাড়ে ৩০ হাজার মানুষের দেহে ভাইরাসটির সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এতে আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৬। মারা গেছেন আরও ৯৬০ জন। ফলে, করোনার দাপটে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ৭৫ জনের। যাদের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী নিউ ইয়র্ক রাজ্য। গোটা দেশের প্রায় ৪৫ শতাংশ রোগীই এ অঙ্গরাজ্যের। বুধবার এ অঞ্চলে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার। এ নিয়ে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার ৫৩ জনে। এদিন সেখানে মারা গেছেন আরও ৩১৯ জন। ফলে শুধু নিউ ইয়র্কেই মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৩৮ জনে। এরপর নিউ জার্সিতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার মানুষ, মারা গেছেন ৫৩৭ জন। দেশটিতে সংকটাবস্থা পার করছে প্রবাসীরাও। দেশটির নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে, করোনার মহামারিতেও পড়েছেন তারাও। বিশেষ করে খাদ্যগত পার্থক্য থাকার কারণে সমস্যা আরও প্রকোট হচ্ছে। দেশব্যাপী এখন পর্যন্ত ৩৬ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এরপরই রয়েছে ফ্রান্স। ইউরোপের দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ১ হাজার ৩৫৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজার ৩৮৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্ত বেড়ে ৫৯ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে ৩৩ হাজার ৭১৮ জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৯২১ জন। নেদারল্যান্ডসও মৃতের সংখ্যা ঠেকেছে এক হাজার ৩৩৯ জনে। জার্মানিতে নতুন করে প্রায় ৫ হাজার ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ফলে দেশটিতে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৪ ৭৮৯ জনে। আর মারা গেছেন ১ হাজার ১০৭ জন। দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ভারতে। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫শ’র বেশি মানুষের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। এতে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৪৩ জনে। মৃত বেড়ে হয়েছে ৭২ জনে। পাকিস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৪২১ জন, প্রাণহানি ঘটেছে ৩৪ জনের। আক্রান্ত বেড়ে শ্রীলংকায়ও। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫১। যেখানে মারা গেছেন ৪ জন। নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারেও এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। আর বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) দেয়া তথ্য অনুযায়ী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬ জন। যেখানে মারা গেছেন ৬ জন। আর সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২৬ জন। এখনও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৪ জন।