চুয়াডাঙ্গায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক

মানুষের সংস্পর্শ যতোটা এড়িয়ে চলতে পারবো ততোটা মঙ্গল
স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে টানা ১০দিন ছুটির কারণে ঢাকা থেকে মানুষ গ্রামের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনসহ শহরের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হ্যান্ডওয়াশের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এই বিষয়টিসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার সভায় সভাপতিত্ব করেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আবু তারেক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ ইয়াহ খান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা পারভীন, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. কামরুজ্জামান, পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. আওলিয়ার রহমান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম, রেডক্রিসেন্ট ইউনিট সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম সাহান ও ইউনিট অফিসার গৌর চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা স্কাউটের সম্পাদক আব্দুল হান্নান, দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল হাসান লেমন, সহসভাপতি শামসুজ্জামান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা মার্কেটিং অফিসার শহিদুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হাসিবুজ্জামান, বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মইনুদ্দিন মুক্তা, মোটর মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. সালাহউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক এ নাসির জোয়ার্দ্দার এবং বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলামসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি ও দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় গৃহীত অন্যান্য সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে দূরপাল্লার সকল প্রকার যানবাহনে জীবাণুনাশক স্প্রে ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক ব্যবহার, যানবাহন চলাচল সীমিতকরণ এবং মুদি, কাঁচামাল, ওষুধের দোকান ও বেকারি ছাড়া সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
সভায় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত ১৮ মার্চ পর্যন্ত দেশে ২ লাখ ৯৩ হাজার বিদেশ ফেরত মানুষ দেশে ঢুকেছে। এরমধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনে আছে ১৮ হাজার। বিষয়টা সবাই জানে। কেউই মানছে না। এই বিষয়গুলো আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। মানুষের সংস্পর্শ যতোটা এড়িয়ে চলতে পারবো ততোটা মঙ্গল। সেনাবহিনী মাঠে পাঠাচ্ছে। যারা বিধি নিষেধ মানছে না, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে। আমরা যদি জনগণকে বের হতে না দিই, তাহলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা থাকবে। যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের তালিকা করে বাড়ি বাড়ি খাবার দিয়ে আসবো। জীবাণুনাশক স্প্রে করতে মেয়র, ইউএনও ও চেয়ারম্যানরা উদ্যোগ নেবেন। যেখানে সেখানে বাস না দাঁড়ায়। যেখানে পানির ব্যবস্থা থাকবে সেখানে বাস থামবে। বাসটার্মিনাল, রেলস্টেশন, একাডেমি মোড়, শহীদ হাসান চত্বর ও কোর্টমোড়ে বেসিন লাগিয়ে জনস্বাস্থ্য বিভাগ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দ্রব্যমূল্যের দাম আগামীদিনগুলোতে সহনীয় থাকে এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করবেন। নিজ থেকে উদ্যোগ নিয়ে করবেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য খোলা থাকবে। হোটেল রেস্টুরেন্ট ও মিষ্টির দোকান চালু রাখা ঠিক হবে না। এখান থেকে রোগ ছড়াতে পারে। আগামীকাল থেকে (বুধবার) ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বাদে শপিংমল বন্ধ থাকবে। গরুর হাট বন্ধ হয়ে গেছে। তবে, পানের হাটে ব্যবসায়ীরা নিরাপদ দূরত্বে থেকে ব্যবসা করতে আহবান জানাচ্ছি। নিজে নিরাপদ থাকবেন, পাশের লোকদের নিরাপদে রাখবেন। তাহলে মহামারী করোনা থেকে রক্ষা পেতে পারি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আবু তারেক বলেন, যারা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন, তারা গ্যাস লাইটার তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার করবেন না। এতে আগুন লেগে যেতে পারে। তাই সব সময় সতর্ক থাকবেন।