চুয়াডাঙ্গায় মাদক শূন্যের কোটায় আনতে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন : অভিযান শুরু
দর্শনা অফিস: মাদকমুক্ত দেশ তথা মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিহাদ ঘোষণা করেছেন। যেকোনো মূল্যে মাদককে শূন্যের কোটায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসনকে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক কাজ করছে প্রশাসন। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামের নির্দেশে গোটা জেলায় মাদকবিরোধী ঝটিকা অভিযান রয়েছে অব্যাহত। পুলিশের কঠোর ভূমিকায় এরই মধ্যে অসংখ্য চিহ্নিত মাদককারবারি এ পেশা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য আত্মসমর্পণ করেছেন পুলিশের সুপারের কাছে। অঙ্গীকার করেছে মাদককারবার ছাড়ার। সেই সকল মাদককারবারিকে প্রাথমিকভাবে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার সুযোগ দিয়েছেন পুলিশ সুপার। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মাদকবিরোধী লাগাতার অভিযানের পরও যারা লুকোচুরি করে এ ধান্দা চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে এখন প্রশাসন।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের বহুল আলোচিত আকন্দবাড়িয়া। দীর্ঘদিন ধরে মাদকের অভয়রণ্য গ্রামটিকে মাদকমুক্ত করতে ব্যতিক্রমী ভূমিকা গ্রহণ করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও আনসার বাহিনীসহ ৬ বাহিনীর আকস্মিক যৌথ অভিযান চালানো হয়েছে আকন্দবাড়িয়া গ্রামে। গতকাল শনিবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত আকন্দবাড়িয়া গ্রামে পরিচালিত হয়েছে অপারেশন ড্রাগস ক্লিন। এ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক, সহকারী পুলিশ সুপার উর্মি, ২৬ আনসার ব্যাটালিয়নের পরিচালক আমিন হোসেন, এনডিসি সিব্বির আহমেদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক শরিয়তুল্লাহ, পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ডের সুবেদার আ. বারেক, ঝিনাইদাহ র্যাব ক্যাম্পের ডিএডি আওয়াল হোসেন, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আ. খালেক, জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম, দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহব্বুর রহমানসহ শতাধিক পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্য। এ সময় সর্তকতামূলক হুঁশিয়ার করা হয় মাদককারবারিদের। এরপর কোনো প্রকার ছাড়ের সুযোগ থাকবে না। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম বলেন, মাদকের সাথে জড়িত কাউকে রেহায় দেয়া হবে না। হোক না সে যতো বড় শক্তিশালী। মাদককারবারির ঠিকানা নির্ধারণ করা হয়েছে জেলখানা। হয় মাদক কারবার ছাড়তে হবে, নইলে ছাড়তে হবে এলাকা। পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম শেষবারের মতো মাদককারবারিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, মাদক কারবার ছেড়ে সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে হবে। কারণ যেকোনো মূল্যের বিনিময়ে চুয়াডাঙ্গাকে গড়ে তোলা হবে মাদকমুক্ত জেলা হিসেবে। এ অভিযানে গ্রেফতার করা হয় আকন্দবাড়িয়ার তারু মিয়ার ছেলে রণি মিয়া ওরফে রমিজ (২০), মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী নাজমা বেগম (২০), আনারুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪৫) ও দুখু মিয়ার ছেলে ইস্রাফিল হোসেনকে (৪৫)। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় মাদকদ্রব্য। গ্রেফতারকৃত ৪ জনের বিরুদ্ধে দর্শনা থানার এসআই মাহমুদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।