ভালোফলনের আশায় চাষিরা : বৈরি আবহাওয়া আর বাজার বিপর্যয় নিয়েই যতো দুশ্চিন্তা
আনোয়ার হোসেন: চুয়াডাঙ্গায় এবারও ভুট্টার আবাদে প্রত্যাশিত ফলনের আশায় দিন গুণছেন চাষিরা। মধ্যসত্ত্বভোগীদের কারসাজিতে বাজার বিপর্যয় না হলে লাভের অঙ্কও দাঁড়াবে আশা ব্যঞ্জক। এরকমই অভিমত ব্যক্ত করে এলাকার ভুট্টা চাষীদের অনেকেই বলেছেন, এখন মাঠকে মাঠ ভরে রয়েছে ফুলবতি ভুট্টাক্ষেত। ঝড় বৃষ্টি নিয়ে তথা বৈরি আবহাওয়া নিয়েই এখন যতো দুশ্চিন্তা।
জানা গেছে, এবারও চুয়াডাঙ্গায় ভুট্টার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। গতবছর জেলার ৪টি উপজেলায় মোট ভুট্টার আবাদ হয়েছিলো ৪৬ হাজার ১২১ হেক্টর জমিতে। এবার ২ হাজার ৩৭৯ হেক্টোর জমিতে বেশি ভুট্টার আবাদ হয়ে মোট আবাদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৫শ’ হেক্টর। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ১৫ হাজার ১২০, জীবননগর উপজেলায় ৫ হাজার ২২০, দামুড়হুদা উপজেলায় ১৪ হাজার ৪৬০ ও আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১৩ হাজার ৭’শ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের চুয়াডাঙ্গা উপপরিচারক মো. আলী হাসান বলেছেন, ভুট্টার আবাদ লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের অনেকেই ভুট্টার আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
এলাকার ভুট্টা চাষিদের মধ্যে শামীম আহমেদ, রমজান আলী, সামু ম-লসহ অনেকেই ভুট্টার আবাদ নিয়ে অভিন্নভাষায় বলেছেন, ভুট্টার দাম যদি মণপতি সর্বনি¤œ ৭শ’ টাকা থাকে তা হলেও লাভের মুখ দেখবে ভুট্টাচাষিরা। কেন না, বিঘাপ্রতি ভুট্টার আবাদে যেখানে খরচ হয় ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা, সেখানে ফলন ৪০ থেকে ৪৮ মণ হলে এবং প্রতিমণ ভুট্টার দাম ৭শ’ টাকা হলে ভালোই লাভ থাকে। কিন্তু প্রায় প্রতিবছরই ভুট্টা মজুদদারসহ মধ্যসত্ত্বভোগীদের কারসাজিতে ভুট্টা ওঠার সময়ই দাম কমিয়ে দেয়। বাজার দরটা ঠিকঠাক থাকলে কৃষকদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আবাদ করা স্বার্থক হয়। অন্যথায় কষ্টের শেষ থাকে না।
ভুট্টার আবাদের সুফল কুফল নিয়ে জানতে চাওয়া হলে কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক বলেছেন, দেশে প্রচুর পরিমানের ভুট্টার চাহিদা রয়েছে। চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে আমদানিও করতে হয়। দেশে উৎপাদন বাড়ালে তার সুফল দেশবাসীই ভোগ করবে। পোল্ট্রি ফিডই নয়, ভুট্টা থেকে শিশু খাদ্যও প্রস্তুত করা হয়। বড়দের খাবারেও ভুট্টার অধিক্য বাড়ছে। ফলে ভুট্টার আবাদ লাভজনক অবস্থায় রাখার বাস্তবমুখি পদক্ষেপ প্রয়োজন। তবে জমির উর্বরতা ধরে রাখতে কৃষকদের সচেতন হতে হবে।